নির্বাচনের আগেই সব উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চায় সরকার

নির্বাচনের আগেই সব উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চায় সরকার

জাতীয় স্লাইড

অক্টোবর ১৭, ২০২৩ ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। ২৬ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই ঘোষণা দেন। কিন্তু এ সময় (নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে) তফশিল ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সোমবার পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে সরকারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগেই সব উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চায় সরকার। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুই উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে নভেম্বরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে।

জানা গেছে, খুলনা-মোংলা রেলপথ এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের পথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৯ ও ১২ নভেম্বর। এর আগে ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এই দুই আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। এ দুই আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হলে শপথ গ্রহণ ও ফলাফলের গেজেট প্রকাশে কমপক্ষে আরও দুই দিন সময় লাগবে। এদিকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দুই উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের তারিখ যদি শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকে তাহলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সোমবার বলেন, আমরা এখনো জানি না নির্বাচন কমিশন কখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করবে। তাই সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের কাজ চলছে। তফশিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। নভেম্বরে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নানক বলেন, দেখা যাক নির্বাচন কমিশন কী করে। তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন, ফলক উন্মোচন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা যাবে না। এ অবস্থায় সরকারের সবুজ সংকেত ছাড়া নির্বাচন কমিশন ১২ নভেম্বরের আগে তফশিল ঘোষণার ঝুঁকি নেবে বলে মনে করেন না ইসি সংশ্লিষ্টরা। ফলে সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা পিছিয়ে তৃতীয় সপ্তাহে চলে যেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের চলমান সব উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করতে চান তারা। নির্বাচনের আগে বড় ও অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো নামমাত্র উদ্বোধন কিংবা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতেই এত তোড়জোড় করছে সরকার। এজন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পরিবর্তে পিছিয়ে তৃতীয় সপ্তাহে যাতে ঘোষণা করা হয়-সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানাবেন তারা।

অবশ্য খুলনা-মোংলা ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের নির্ধারিত তারিখ ঠিক থাকার পরও সরকারের সবুজ সংকেত নিয়ে নির্বাচন কমিশন নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফশিল ঘোষণা করতে পারে-এমনটাও মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের একজন নীতিনির্ধারক। তার মতে, এক্ষেত্রে বর্তমান সরকার জনগণের সহানুভূতি পাওয়ার আশায় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দুই উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বাতিল করতে পারে। অবশ্য সেক্ষেত্রে দুই আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু টানেল ২৮ অক্টোবর, ঢাকার মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন ২৯ অক্টোবর, খুলনা-মোংলা রেলপথ ৯ নভেম্বর এবং ১২ নভেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। এর বাইরে উদ্বোধনের তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী-মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প ও পায়রাবন্দর উন্নয়ন কার্যক্রম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *