নিম একটি বহু বর্ষজীবী ও চিরহরিৎ বৃক্ষ, যা আকৃতিতে ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। নিমগাছ সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়াপ্রধান অঞ্চলে ভালো হয়। নিম ঔষধি গাছ হিসেবে আমাদের কাছে সুপরিচিত। কেননা, নিমের ডাল, পাতা, রসসহ এর সবই কাজে লাগে।
নিমের পাতা থেকে আজকাল প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর। নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এ কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এ কারণে আজকাল নিম কাঠের আসবাবও তৈরি করা হচ্ছে। নিমের নানাবিধ গুণাগুণের কথা বিবেচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিমকে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষণা করেছে।
সাধারণত বর্ষাকালে নানা রকম রোগব্যাধি-সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যার ফলে ত্বক এবং চুলের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পড়ে। পেটের সমস্যা, ত্বকে ইনফেকশন, চুলে খুশকির মতো নানা সমস্যা লেগেই থাকে বর্ষাকালে। তবে এসব সমস্যা এড়াতে সহায়ক হতে পারে নিম।
আসুন জেনে নিই, নিম যে যে উপায়ে কাজে লাগতে পারে।
ত্বক
বর্ষায় আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঘাম বেশি হয়। ত্বক থেকে তেলও বেশি বেরোয়। ফলে গোসলের পানিতে কয়েকটা নিমপাতা ফেলে স্নান করলে উপকার পাবেন। র্যাশ বা কোনো রকম ছোটখাটো সংক্রমণ কমাতেও নিমপাতা ফুটিয়ে গোসল করতে পারেন। ব্রণের সমস্যা দূর করতে নিমপাতা এবং চন্দন একসঙ্গে বেটে মুখে লাগাতে পারেন। নিমপাতার অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল গুণ ত্বকের সবরকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
চুল
আবহাওয়া বদলালে মাথার পিএইচ মাত্রায়ও হেরফের হয়। চুল পড়া, মাথার তালু শুকিয়ে যাওয়া, খুশকির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রেও নিমপাতা উপকারী। নিমপাতা বেটে মাথায় লাগাতে পারেন। কিংবা নিমপাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে চুলও ধুতে পারেন।
স্বাস্থ্য
নিম-বেগুন বা নিমপাতা দিয়ে তৈরি কোনো পদ খেলে পেটের সমস্যা কম হবে। পেট পরিষ্কার থাকবে। নিমপাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। নিমপাতার রস প্রত্যেক দিন খেলে রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
আরও পড়ুন: নিম-তুলসীর ত্বক চর্চা!
দাঁত
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে বা দাঁত জীবাণুমুক্ত রাখতে নিমের জুড়ি মেলা ভার। তাই অনেক টুথপেস্ট এবং মাউথওয়াশের প্রধান উপকরণ নিম। অনেকেরই অভিযোগ বর্ষায় দাঁতের শিরশিরানি বেড়ে যায়। তাদের জন্য নিমপাতা উপকারী। নিমের ডালও চিবোতে পারলে দাঁতের পক্ষে ভালো কাজ করে।
সূত্র: আনন্দবাজার