এ আর রাজ
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ড. আতিউর রহমান বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরিতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেদিন আমরাও ছিলাম। সেই প্রেক্ষিতে আজ আমরা সাহসের সঙ্গে জোর গলায় বলতে পারি আমাদের দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। এটার পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
২৩ জুলাই, শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কমান্ড, বাংলাদেশ ব্যাংকের যৌথ আয়োজনে মহুয়া সাংস্কৃতিক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ৩টি গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যারা বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে বলে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের কথার ভিত্তি নেই। অনেক প্রান্তিক পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবা চলে গেছে। যার পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর। মুক্তিযুদ্ধের ৮০ শতাংশই ছিল কৃষক শ্রেণি। আর কৃষকদের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় পাশে থেকেছে। এক অর্থে কৃষকরাও ডলার কামাচ্ছেন, কেননা এই মুহূর্তে যদি বাংলাদেশের বাইরে থেকে ২-৩ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য কিনতে হতো, তাহলে রিজার্ভ সমস্যা অনেক বেশি দেখা দিত। সেটা যেহেতু লাগছে না সুতরাং কৃষকও এ রিজার্ভ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কী আমি এটা জানতাম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ব্যাংকে আমাকে বসিয়েছিলেন। বাংলাদেশে যতগুলো ব্যাংক আছে তার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যতম। দেশে জন্মগ্রহণ করলেই দেশকে ভালোবাসা হয় না, দেশকে জানতে হবে এবং ভালবাসতে হবে তাহলেই দেশকে ভালবাসার পূর্ণতা পাবে।
লায়ন হামিদুল আলম সখার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কমান্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট অভিনেতা পিনাকী সরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, বিশিষ্ট ছড়াকার বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সাবেক পরিচালক আনজীর লিটন, সাপ্তাহিক শীর্ষ খবরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) সহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ আহমদ আলী ও মোঃ আওলাদ হোসেন চৌধুরী।
সুভাষ সিংহ রায় বলেন, এ ধরনের গ্রন্থ আরও প্রকাশ করা দরকার। বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে না জেনে, সঠিক তথ্য না দিয়ে বিভিন্ন চ্যানেলে তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাশ্বত মনির বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন সম্পন্ন করলেন। বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে বাংলাদেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলাই শেখ হাসিনার লক্ষ্য। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জয়লাভ করতে হবে। তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সংস্কৃতি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য সুজাতুল আলম কল্লোল, সাংবাদিক শাহরিয়ার মাহমুদ প্রিন্স। বঙ্গবন্ধুর উপর পুঁথি পাঠ করেন আবৃত্তি শিল্পী হাসিনা মমতাজ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব বীর বাঙালি শহীদ হয়েছেন এবং ১৯৭৫ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর অতিথিবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ৩টি গ্রন্থের পাঠোন্মোচন করা হয়। গ্রন্থ ৩টি হলো- (১) বঙ্গবন্ধুর গল্প, সম্পাদনা- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম কমান্ড এর সভাপতি লায়ন হামিদুল আলম সখা। (২) বাঙালির মুক্তির সনদ বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা, সম্পাদনা- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আওলাদ হোসেন চৌধুরী ও লায়ন হামিদুল আলম সখা। (৩) আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা, সম্পাদনা- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আহমদ আলী ও লায়ন হামিদুল আলম সখা।
এসময় গ্রন্থ ৩টি নিয়ে একটি স্যুভেনির এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। আলোচনা শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে অতিথিবৃন্দকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।