নাসিরনগরে ব্রি-২৮ ধানে চিটা, দিশেহারা কৃষক 

দেশজুড়ে

এপ্রিল ১৬, ২০২৩ ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

মোঃ আব্দুল হান্নান,নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হাওড় অঞ্চল গুলোতে ধান কাটা শুরু হলেও অত্রাঞ্চলে ব্রি-২৮ ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। আগাম ফলনের আশায় চাষ করে ছত্রাকজনিত ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অধিকাংশ ধানে চিটা পড়েছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দ্রুত পাকাধান কেটে নেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নাসিরনগরের ১৩ ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ বিঘা জমিতে ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯সহ বিভিন্ন উফশী ও হাইব্রিড ধানের চাষ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ব্রি-২৮ ধান আবাদ করা হয়। কিন্তু কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে কীটনাশক প্রয়োগ করেনি। এছাড়া বৈরী আবহাওয়া ও অতিমাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগের কারনে ধানে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ে বলে কৃষি অধিদপ্তর সুত্র জানিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষক তাদের ব্রি-২৮ ধান কাটতে শুরু করেছেন। ধানের চারাগুলো দেখতে পাকা মনে হলেও বাস্তবে অধিকাংশ ধান সম্পূর্ণ শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে। আবার কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ ভেঙে গেছে। বিশেষ করে উপজেলার গোকর্ণ, গোয়ালনগর, সদর ও বুড়িশ্বর ইউনিয়নের হাওরের অধিকাংশ ধানে চিটা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, বোরো মৌসুম শুরুর পূর্বে বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের ব্রি ধান-২৮ জমিতে রোপণ করতে বারণ করা হয়েছে। কিন্তু তারা পরামর্শ না শুনে বাজারের সহজলভ্য বীজ ধান নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো জমিতে রোপণ করে। যার ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কৃষকদের দাবি, কৃষি অফিস থেকে বলা হয়েছে যেন ব্রি-২৮ ধান জমিতে রোপণ না করি। কিন্তু বিএডিসি থেকে ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ ধান রোপণ করার জন্য সবসময় উদ্বুদ্ধ করে থাকে

মেদির হাওরের কৃষক আল আমিন বলেন, ‘গতবার বন্যা সব ধান নিয়া গেছিল। এবার আগাম জাতের ব্রি ধান-২৮ করেছিলাম। আমার সব শেষ। ৪ হাজার টাকা খরচ করে যে ধান কাটছি ৪ টাকার ধানও পাব না। গরুর (বন) খড় হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, মৌসুমের শুরু থেকেই ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কায় স্কোয়াড গঠন করে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি আগামী মৌসুমে ব্রি-২৮ ধান রোপণ না করে এর বিকল্প হিসেবে ব্রি-৮৮, ব্রি-৯৬ ও বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান রোপণ করার অনুরোধ করেছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *