নাসিরনগরে তথ্যসংগ্রহকারীর ভূলের কারণে একই ব্যক্তির দুই মৃত্যুর তারিখ

দেশজুড়ে

আগস্ট ৩০, ২০২২ ১০:৩২ অপরাহ্ণ

আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ২০১৯ সালের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তথ্যসংগ্রহকারীর ভূলের জন্য মৃত তমিজ উদ্দিন নামে একই ব্যক্তির দুই মৃত্যু তারিখ হয়েছে বলে অভিযোগ তার নাতিন জামাই ছোয়াব মিয়া সহ স্বজনদের। তাছাড়াও তথ্য সংগ্রহকারী তার সরবরাকৃত তথ্যে তমিজ উদ্দিনের আপন ভাগিনাকে ভাতিজা পরিচয় দিয়েছেন। তার সরবরাহকৃত তথ্যে তমিজ উদ্দিনের ভাগিনা বাসন মিয়া নিজে কোন সই-স্বাক্ষর না জানলেও তথ্য ফরমে তথ্য সংগ্রহকারী ফরমে বাসন মিয়ার স্বাক্ষর নিতে দেখা গেছে। বাসন মিয়ার বিভিন্ন দলিল পত্র খোঁজে ও আনুষাঙ্গিক কাগজ পত্রে দেখা গেছে প্রত্যেকটিতে বাসনের টিপ দিতে দেখা গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া গ্রামে। ২০২১ সালের ৩০ জুন ৩ নং কুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াছ আলী কর্তৃক অফিস আদেশে তমিজ উদ্দিনের ২৫ নভেম্বর ২০১৫ সালে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তথ্য সংগ্রহকারী তুল্লাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র রায় নির্বাচন কমিশনের ১২ নম্বর ফরমে তমিজ উদ্দিনের মৃত্যুর তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৫ উল্লেখ করেছেন। তাছাড়াও তমিজ উদ্দিনের ভাগ্নে বাসন মিয়া নিজের নাম লিখতে না পারলেও উক্ত ফরমে বাসন মিয়ার স্বাক্ষর রয়েছে। বাসন মিয়া ও তমিজ উদ্দিন সম্পর্কে মামা ভাগ্নে হলেও উক্ত তথ্য সংগ্রকারী সেখানে বাসন মিয়াকে তমিজ উদ্দিনের ভাতিজা পরিচয় দিয়েছেন। এতে অনেকেই মনে করছেন তথ্য সংগ্রহকারী শ্যামল চন্দ্র রায় তার ব্যক্তিগত আক্রোশে অথবা একটি পক্ষের নিকট থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এমন কাজ করে থাকতে পারেন বলে দাবী করেন বাসন মিয়ার মেয়ের জামাই ছোয়াব মিয়া সহ আরো অনেকেই।

এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহকারী তুল্লাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র রায়ের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন স্বাক্ষর বাসন মিয়া নিজেই দিয়েছে। বাসন মিয়াকে তিনি নিজে দেখেছেন বা চিনেন কি-না ও তার বাড়ি গ্রামের কোনদিকে জানতে চাইলে শ্যামল চন্দ্র রায় এর কিছুই জানেন না ও চিনেন না বলে জানান। তবে তিনি বলেন, তখন একজন আমার সামনে ১২ নম্বর ফরমে স্বাক্ষর করেছিল; কিন্তু তিনি বাসন মিয়া কি-না তিনি জানেন না।

বাসন মিয়ার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তিনি নির্বাচন কমিশনের ১২ নম্বর ফরমে নিজে স্বাক্ষর করেছিলেন কি-না জানতে চাইলে বাসন মিয়া বলেন আমি স্বাক্ষর জানি না। তাই সারা জীবন আমার দলিলপত্র সহ সমস্ত কাগজ পত্রে টিপ সহি দিয়ে আসছি। আপনারা আমার সমস্ত কাগজ পত্র যাচাই করে দেখতে পারেন।

গত ২৯ জুন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলামের বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতে প্রেরিত এক প্রতিবেদনেও তমিজ উদ্দিনের মৃত্যু তারিখ ৩ এপ্রিল ২০১৫ দেখানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *