দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় সাদী মোহাম্মদের মরদেহ

দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় সাদী মোহাম্মদের মরদেহ

বিনোদন

মার্চ ১৪, ২০২৪ ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ধ্যায় তার ঘর ভেতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেখা যায় তার মরদেহ ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে।

বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছেন স্বজন ও নিকটজনরা। এদিন রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা।

তিনি বলেন, আমরা খবর পেয়ে মাত্র বাসায় এসেছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, আমি খবর পেয়েছি। তার বাসার দিকে যাচ্ছি।

শহিদ পরিবারের সন্তান সাদী মোহাম্মদের ভাই শিবলী মোহাম্মদ বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী।

ময়নাতদন্তের জন্য সাদি মহম্মদের মরদেহ শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক স্বাগতিক লোহানী বলেন, সন্ধ্যা ৮টার দিকে তাকে আনা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতে কোনো চিহ্ন নেই। তবে ফাঁস দিলে গলায় যে দাগ থাকে সেটা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, তিনি ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ লাশ হিমঘরে থাকবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ আছর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রসংগীতে পড়াশোনা করা সাদী মোহাম্মদের বাবা শহিদ সলিমউল্লাহ। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা সলিম উল্লাহর বাড়িতে নিয়মিত বৈঠকে আসতেন দলের শীর্ষ নেতারা, আসতেন বঙ্গবন্ধু পুত্র শহিদ শেখ কামালও।

একাত্তরের ২৩ মার্চ তাজমহল রোডের সেই বাড়িতে সেজ ছেলে সাদি মহম্মদ তকিউল্লাহর আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবা সলিমউল্লাহ, সেই পতাকা সেলাই করে দিয়েছিলেন সাদী-শিবলীর মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ। সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে একাত্তরের ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে সলিমউল্লাহর বাড়ি। পুড়িয়ে দেয়া হয় পুরো বাড়ি, গুলি করে মারা হয় সলিম উল্লাহকে।

সাদী মহম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। রবীন্দ্রসংগীতে তার মূল পরিচিতি গড়ে উঠলেও আধুনিক গানেও তিনি সমান দেশব্যাপী পরিচিত ছিলেন। অসংখ্য রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও। এছাড়াও তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

২০১২ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেয় চ্যানেল আই। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *