মতিউর রহমান সরকার দুখু(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি)
গত ৩১ অক্টোবর, সোমবার মধ্যরাতের পর রাজু ভাস্কর্যে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীর সাথে আইন ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী অশোভন আচরণ করায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ নাজমুল আলম ওরফে জিম নাজমুলকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কৃত অপরাধের জন্য কেন তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না -এই মর্মে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। এ তথ্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেন।
টিএসসিতে রাতে তরুণীকে হেনস্থার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সিরাজুল ইসলাম রুবেলের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়,
“রাত আনুমানিক ২টা ৫৫ মিনিট। আমি রাজু ভাস্কর্য থেকে একটু দূরে চায়ের আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখি এক তরুণীকে এক ছেলে (জিম নামজমুল, সূর্যসেন হল) একেরপর এক লাফিয়ে লাফিয়ে চড় দিচ্ছে।
এ ঘটনা দেখে এগিয়ে গেলাম। এরপর ওই ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, মেয়ের গায়ে কেন হাত দিয়েছো? তখন জিম আমাকে বলে মেয়ে তাকে আগে একটা থাপ্পর দিয়েছে, এজন্য সেও পাল্টা থাপ্পর মারলো।
মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে যে, সে তার ছোট ভাই এবং বন্ধুদের সঙ্গে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেছিলো। হঠাৎ জিম এসে তাকে কেন ছবি তুলতেছিলো? এসব প্রশ্ন করা শুরু করে। এরপর বাকবিতণ্ডার মধ্যে তার সঙ্গে অশালীন ভাষায় (টিজিং) আচরণ করায় তাকে এক থাপ্পর মেরেছে। ক্ষিপ্ত হয়ে জিমও মেয়েকে পাল্টা তিনটা থাপ্পর মারে। যেটা দেখে আমি সামনে এগিয়ে গেলাম। পরে মেয়ে আমাদের বললো যে, তার হাতের আইফোন জিম কেড়ে নিয়ে গেছে। তখন জিমকে জিজ্ঞেস করলে সে আইফোন বের করে ওই মেয়েকে দিয়ে দেয়।
এ ঘটনা এখানে শেষ নয়।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনতেছিলাম। হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে আসলো। তাদের সঙ্গে একটি ছেলেও আসলো। বয়স আনুমানিক (১৪) হবে। নাম আবুল বাসার। সে জিমকে দেখিয়ে দিয়ে বললো, ভাই এই ছেলে আমাকে রাত ১০টার দিকে টিএসসি থেকে উদ্যানের ভেতর নিয়ে যায়। এরপর আমাকে মেরে আমার ফোন এবং ম্যানিব্যাগ নিয়ে যায়।সে বললো, মিলন চত্বরের ভাজাপোড়ার দোকানে কাজ করে মাস শেষে সাত হাজার টাকা নিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। আমাকে মেরে সব টাকা নিয়ে গেলো ভাইা। সকালে আমার কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে। এ ঘটনা বলার পরপরই জিম ঘটনাস্থল থেকে দৌঁড়ে চলে যায়। একটু পর তার ফেসবুকে প্রবেশ করলাম। দুয়েক মিনিট সক্রিয় থাকার পর হঠাৎ দেখি অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেটেড। তিনি (সিরাজুল ইসলাম রুবেল) আরও বলেন
গত কয়েক মাস আগে, জার্নালিজম ডিপার্টমেন্টের নারী শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে এ ছেলের বিরুদ্ধে।”