গাজা ‘ছাড়ো নয় মরো’

গাজা ‘ছাড়ো নয় মরো’

আন্তর্জাতিক স্লাইড

ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

গাজার পুরো ভূখণ্ডজুড়ে ভারী গোলাবর্ষণ আর বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। নিজের জীবন রক্ষায় এখন ফিলিস্তিনিদের সামনে পথ মাত্র দুটি। হয় ইসরাইলি নির্দেশনা অনুযায়ী গাজার কোন অঞ্চল ‘ছাড়ো নয় মরো’। আর নির্দেশনা না মানলেই মৃত্যু নিশ্চিত।

ইসরাইলি ভারী বোমাবর্ষণ চলাকালীনই সোমবার মধ্যরাত ও মঙ্গলবার ভোরের দিকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। খান ইউনুসের অন্তত ২০ এলাকা থেকে মানুষকে সরে যেতে বলেছে তারা। আলজাজিরা।

জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটির বিরোধ নিষ্পত্তি ও শান্তি বিনির্মাণ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ চেরকাউই বলেন, ‘ইসরাইলের সেনাবাহিনী এখন উত্তর ও দক্ষিণ গাজা উভয় দিকেই আক্রমণ করছে। আর গাজার ফিলিস্তিনিদের ইসরাইল শুধুমাত্র একটি পথ পছন্দ করার সুযোগ দিয়েছে। আর তা হলো হয় গাজা ছাড়ো নয় মরো। তাদের হাতে আর অন্য কোনো বিকল্প নেই।’

জেরুসালেমে ডিডব্লিউ প্রতিনিধি রেবেকা রিটার্স জানিয়েছেন, ‘গাজার মানুষদের এমন একটা ম্যাপ দেয়া হচ্ছে, যেটা বিভিন্ন বর্গক্ষেত্রে ভাগ করা আছে। প্রতিটি বর্গক্ষেত্রকে নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিদিন ইসরাইলের সেনারা জানিয়ে দেবে কোন নম্বরের জায়গাগুলোকে তারা টার্গেট করেছে। সেখান থেকে মানুষকে সরে যেতে হবে।’

তবে ‘মানুষের সত্যিই কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই’ বলে উলে­খ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘তারা লুকোনোর জায়গাও বিশেষ পাচ্ছেন না। ইন্টারনেটেরও সমস্যা আছে। ফলে নির্দিষ্ট দিনে নিরাপদ জায়গা কোনটা তা জানতেও মানুষের অসুবিধা হচ্ছে।

এছাড়া নির্দেশনা মেনেও রেহাই পাচ্ছেন না গাজাবাসী। ইসরাইলি নির্দেশনা মেনে খান ইউনুস থেকে পালানোর সময় এই অঞ্চলের আবাসন আল-কাবিরা শহর  ও বনী সুহেলা পৌরসভার দিকে কিছু অ্যাম্বুলেন্স ভারী গোলাবর্ষণের মাধ্যে আটকে পড়ে। এ সময় ইসরাইলি হামলায় কিছু মানুষ আহতও হন।

গাজার খুব কম অঞ্চলই বর্তমানে ইমরাইলি হামলার বাইরে আছে। নিরাপত্তার আশায় একেক অঞ্চল থেকে সরে গিয়ে পরিমাণে খুব কম জায়গায় গাদাগাদি করে বাস করছে মানুষ। একসঙ্গে এত মানুষের অবস্থানের কারণে কলেরা এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

রামাল্লাভিত্তিক আইন বিশেষজ্ঞ ও অক্সফামের অধিকার প্রচারক বুশরা খালিদি সতর্ক করেছেন, ইসরাইলি চাপে ফিলিস্তিনিদের গাজায় দক্ষিণে একটি ছোট অঞ্চলে স্থানান্তরিত করার কারণে তাদের কাছে সাহায্য সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বাড়ছে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি। ১২.১৪ বর্গফুটের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের মতো আকারের একটি এলাকায় ১৮ লাখ মানুষ থাকছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *