ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩ ৬:৫৫ অপরাহ্ণ
পবিত্র কুমার দাস,
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ৯ মে। প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরে মাত্র একবার সমাবর্তনের দেখা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অথচ ‘নিয়ম’ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছরই সমাবর্তন হওয়ার কথা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএইচএম মোস্তাফিজুর রহমান সমাবর্তন আয়োজনের কথা বললেও করতে পারেননি৷ তবে নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর সমাবর্তন আয়োজনের কথা বলছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল। এরপর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন সমাবর্তনের কোনো উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নি। অথচ এই চার বছরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম ব্যাচের প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরে মাত্র একবার সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ায় এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর আসায় আশা দেখছেন তারা। নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়ার পেছনে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবের অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ ব্যাচের (২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজার রহমান বলেন, সমাবর্তন হলো প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি মিলনমেলা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরারও একটি মাধ্যম। একজন সদ্য গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীর জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেন না সমাবর্তনে সবার সাথে মতবিনিময় করার একটা সুযোগ থাকে। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে সিনিয়রদের থেকে নানা ধরণের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়মিত সমাবর্তন আয়োজনের ব্যবস্থা করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও মাত্র একটি সমাবর্তন হয়েছে যা মোটেও কাম্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে আয়োজিত প্রথম সমাবর্তনে মোট ১ হাজার ৩৯৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচ (২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ) থেকে পঞ্চম ব্যাচের (২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তবে স্নাতক শেষ না হওয়ায় ৫ম ব্যাচের অর্থনীতি ও ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়ার সুযোগ পাননি। এরপরে আর কোনো সমাবর্তন আয়োজনের চেষ্টা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
তিনি বলেন, সমাবর্তন প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবথেকে গুরুত্ত্বপূর্ণ এবং অবশ্যপালনীয় একটি অনুষ্ঠান। বিশ্বে যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় পুরোদমে সগৌরবে চলছে সেগুলোর প্রত্যেকটিই প্রতি বছর সমাবর্তন আয়োজন করে থাকে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭ বছরে মাত্র একটি সমাবর্তন আয়োজিত হয়েছে, এটি খুবই দুঃখজনক। যেন খুব শিগগিরই একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যায় এ বিষয়ে আমরা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির আনুকূল্য বিবেচনায় প্রস্তুতি নিচ্ছি।