ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত থেকে যেসব সুবিধা পাচ্ছেন পুতিন

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত থেকে যেসব সুবিধা পাচ্ছেন পুতিন

আন্তর্জাতিক স্লাইড

অক্টোবর ১৫, ২০২৩ ৮:২২ পূর্বাহ্ণ

পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত নিরসনের একমাত্র উপায় বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

পুতিন গাজায় ইসরাইলি অবরোধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদ অবরোধের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এটি মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস করে। হয়তো সবাই হামাসকে সমর্থন করে না; কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হবে নারী-শিশুসহ সবাই।

এ সংকট সমাধানে রাশিয়া মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে পারে উল্লেখ করে পুতিন বলেন, সবার আগে অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ইসরাইলে হামলা এবং গাজায় ইসরাইলের পাল্টা হামলা নিয়ে এখন ব্যস্ত পুরো বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে এই লড়াইয়ে ইসরাইলকে সর্বাত্মক সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর নজরও এখন এই সংকটের দিকে।

এতে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ অনেকটাই আড়ালে চলে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট থেকে রাশিয়া কী কী সুবিধা পেতে পারে, এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করেছে বিবিসি।

এতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রধান খবর হয়ে উঠেছে তা। খবরের শিরোনাম কতটা রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে ইসরাইলের দিকে সরে গেছে, সেই হিসাব এখন কষছে মস্কো।

কিন্তু এখানে শুধু খবরের বিষয় বদলে যাওয়ার চেয়ে বেশি কিছু রয়েছে। রাশিয়ার কর্তাব্যক্তিরা এটাও আশা করছেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহের একটা বড় অংশ এখন ইউক্রেনের বদলে ইসরাইলের দিকে ঘুরে যাবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া ইসরাইলের শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। বিশেষত ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাশিয়া–ইসরাইল সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করেছে।

ইসরাইলে হামাসের হামলার পর ভ্লাদিমির পুতিন সবচেয়ে জোর দিয়ে যে কথাটি বলতে চেয়েছেন তা হল, এটা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ব্যর্থতার একটি উদাহরণ।

মস্কো সব সময় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে যেভাবে আক্রমণ করে আসছে, এটা তার সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। মধ্যপ্রাচ্য সংকটের জন্য আমেরিকাই মূলত দায়ী, এমন একটি চিত্র দিতে পারাটা ওই অঞ্চলে ওয়াশিংটনের প্রভাব কমিয়ে রাশিয়ার অবস্থান শক্ত করার কৌশল।

মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত থেকে রাশিয়ার সুবিধা পাওয়ার আলোচনায় বিপদের দিকটিও উঠে এসেছে।

রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হান্না নোট্টে বলেন, এই সংকট যদি ইউক্রেন থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়– যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ইসরাইলের ভূমিকা বিবেচনায় তেমনটি হওয়ার বাস্তব ঝুঁকিও রয়েছে– হ্যাঁ, সেক্ষেত্রে রাশিয়া স্বল্পমেয়াদে সুবিধা পেতে পারে।

তবে এই যুদ্ধ যদি বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ে, হামাসকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দেওয়া ইরানসহ অন্যরাও যদি জড়িয়ে যায় তাহলে রাশিয়া সুবিধা পাবে না বলে মনে করেন হান্না নোট্টে।

তিনি বলেন, রাশিয়া ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ চায় না। যদি ঘটনা সেদিকে মোড় নেয় এবং এটা স্পষ্ট হয় যে আমেরিকা জোরালোভাবে ইসরাইলের পক্ষ নিচ্ছে তাহলে আমি মনে করি, ইরানের পক্ষ নেওয়া ছাড়া রাশিয়ার আর কোনো উপায় থাকবে না। আমি নিশ্চিত নই, তারা সেটা চায় কি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *