আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়ায় দূর্নীতির দায়ে বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে উন্নয়ন কাজে বাঁধা

আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়ায় দূর্নীতির দায়ে বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে উন্নয়ন কাজে বাঁধা

দেশজুড়ে

মে ১৬, ২০২৩ ৬:৩৮ অপরাহ্ণ

মিলন বিশ্বাস, আশাশুনি (সাতক্ষীরা)

সাতক্ষীরা আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্নীতির অভিযোগে বহিস্কার হওয়া প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা খাতুন আবারও স্কুলের উন্নয়ন কাজ বন্ধ করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্কুল কমিটির সভাপতি, অভিভাবক সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ১২টায় কুঁন্দুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে তদন্তে আসেন যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আব্দুস সালামসহ তিন বিশিষ্ট একটি টিম।

তবে তদন্তকারী কর্মকর্তার সামনেই বহিস্কার হওয়া প্রধান শিক্ষকের লোকজন এসে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে ঘটনা স্থলে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা পূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।

তদন্ত নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, আশাশুনির কুঁন্দুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবিতা বিশ্বাস দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের পুকুরের মাছ বিক্রি, বিদ্যালয়ের এস.এম. সি কমিটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল হওয়া সত্ত্বেও পুরাতন কমিটিকে নিয়ে মিটিং করা, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন মূলক কাজ যথাযথ ভাবে না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালক আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ১২টায় যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে কুঁন্দুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশনা দেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধহাটা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মতিয়ার রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বলতে থাকেন আজ স্কুলের এই অবস্থা শুধু মাত্র সাবেক প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা খাতুনের কারণে। দূর্নীতির দায়ে মুর্শিদা খাতুন বহিষ্কার হয়েছেন। একথা বলতেই মুর্শিদা খাতুনের সমর্থকেরা তাদের উপর চড়াও হন। এর পরপরই দূর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক মুর্শিদা খাতুন ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবিতা বিশ্বাসের সমর্থকেরা বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু, আশাশুনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেমা খাতুন মিলি ও তদন্ত কর্মকর্তা যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আব্দুস সালাম সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সামনেই তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।

ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম ও আদর আলী সরদার বলেন, মহিলা মেম্বার মমতাজ খাতুন আমাকে বলেন খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালক এর কার্যালয়ের বড় বাবু সাঈদ সাহেবকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে কথা ফাইনাল, অল্প কিছুদিনের মধ্যে বহিষ্কার হওয়া ওই প্রধান শিক্ষক আবার ও এখানে যোগদান করবে তখন তোরা বুঝতে পারবি।

এসকল বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেননি বুধহাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু।

আশাশুনি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেমা খাতুন মিলি জানান, স্কুলের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারিনা, তবে পুকুরের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা সৃষ্টি করলে সেটি আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে মেনে নেবোনা। পুকুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখানে তদন্ত কমিটি এসেছে। ইতিমধ্য এই পুকুরটি বাঁধানোর জন্য একটি বড় প্রজেক্ট আসায় , বুধহাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু এই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও আমি এই তিনজন সিদ্ধান্ত নিয়ে পুকুরের স্বল্প পানি নিষ্কাশন করে শুকানোর ব্যবস্থা করি। ঠিকাদার আমাকে জানান এই কাজ দ্রুত শুরু না করলে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। ইতিপূর্বে এই স্কুলের একটি নতুন ভবন হওয়ার কথা থাকলেও স্কুলের সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির ভিতর দন্ধ থাকায় ভবনটি হয়নি।

এসব বিষয়ে বয়িস্কার হওয়া প্রধান শিক্ষক মুরশিদা খাতুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি বর্তমানে বহিস্কার আছি আমি কোন কথা বলতে পারবো না।

তদন্ত কর্মকর্তা ও যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আব্দুস সালাম বলেন, তদন্তের জন্য আমি এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছিলাম, একপর্যায়ে তারা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। আমরা সবার কথা শুনেছি এবং তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আমরা অভিযোগ গুলো গ্রহণ করেছি পরবর্তীতে অফিসের মাধ্যমে জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *