আরও বিস্তৃত হবে শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে দুই-এক দিন

আরও বিস্তৃত হবে শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে দুই-এক দিন

জাতীয় স্লাইড

জানুয়ারি ২১, ২০২৪ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র শীত অব্যাহত আছে। শীতের এই তীব্রতা রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজারে আরও কিছুটা বাড়তে পারে।

রোববার সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা আরও দুদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। পাশাপাশি এই শৈত্যপ্রবাহের এলাকা আরও বিস্তৃত হতে পারে।

বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আরও কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারা দেশে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে।

জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, অধিকাংশ এলাকায় তাপমাত্রা এভাবেই থাকতে পারে। তবে কয়েক জায়গায় রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমবে। আগামী ২৪ জানুয়ারি বুধবার থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মাসের শেষের দিকে তাপমাত্রা আরও কমবে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, কুয়াশার কারণেই অস্বস্তিকর অবস্থা চলছে। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে না। উত্তর-পশ্চিমের বাতাসের কারণে দেশের কোথাও কোথাও বেশি ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে।

শনিবার আবহাওয়া অফিসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর বর্ধিত অংশ অবস্থান করছে উত্তর বঙ্গোপসাগরে।

এছাড়াও উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিত অংশ পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। এসবের প্রভাবে বাংলাদেশে তাপমাত্রা কমছে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আরও বলেন, দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান ৫ শতাংশের নিচে থাকলে তীব্র শীত অনুভূত হয়। ইতোমধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ কিছু এলাকার দিন ও রাতের তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছে।

এসব এলাকায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। কুয়াশার কারণে শনিবার সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে না পেরে দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শনিবার দিনাজপুর ও রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ এবং নওগাঁর বদলগাছীতে রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা। আর সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজার ও ফেনীতে।

ঢাকায় সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখা গেছে। রাজশাহীতে এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ৭ ও সকাল ৯টায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সন্ধ্যার পর শহরে তাপমাত্রা একটু বেশি থাকলেও গ্রাম ও চা বাগানে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হয়। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আছে।

পঞ্চগড়: শীতের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়। জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। কঠিন দরিদ্রতায় জীবনযাপন করছেন নিম্ন আয়ের মানুষরা।

শনিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি। ফলে তৃতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। চরম বিপাকে পড়েছেন আলু চাষিরা। শীতে খেতে থাকা আলুতে ছত্রাকের আক্রমণ বেড়েছে। পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

শীতে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগ।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৯ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া বেসরকারিভাবেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রত্যন্ত এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সকালে উত্তরের এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগের দিন শুক্রবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার কুয়াশার মতো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে কুয়াশা কেটে গিয়ে তাপমাত্রা একটু বেড়েছিল।

শনিবার আবার ঘন কুয়াশা পড়েছে। ফলে তাপমাত্রাও কমে গেছে। জানুয়ারিজুড়েই এমন আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে বলে জানান আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাজীব খান।

মেহেরপুর : বৃহস্পতি থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টির পর কনকনে ঠান্ডায় জড়িয়ে যাচ্ছে মানুষ। গত ৯ দিন মেহেরপুরের আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় বেশি কষ্ট পাচ্ছে ফাঁকা মাঠে সরকারিভাবে গড়া গুচ্ছগ্রাম, মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং ভূমিহীন পাড়াগুলোর মানুষ।

শেরপুর: সূর্যের দেখা মেলায় শুক্রবার কিছুটা সময় শেরপুরে শীতের অনুভূতি একটু কম হলেও আবার সন্ধ্যার পর থেকে এবং শনিবার  সকালে উত্তরের কনকনে বাতাসে বেড়েছে শীতের দাপট। ঘর থেকে বের হলেই হাত ও পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *