সাংবিধানিক সংকটে পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক স্লাইড

এপ্রিল ৪, ২০২২ ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করা হয়েছে। এরপর থেকে দেশটিতে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অবস্থা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

পাকিস্তানের ইতিহাস বলছে, কোনও প্রধানমন্ত্রীই তার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।

রোববার (৩ এপ্রিল) পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার কাসিম শাহ সুরি অনিবার্যকারণবশত ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল করে দেন।

সেশনের শুরুতেই ডেপুটি স্পিকার জানিয়ে দেন, অনাস্থা প্রস্তাবটি সংবিধানের বিরুদ্ধে। সংবিধান মেনেই এই অনাস্থা প্রস্তাবকে বাতিল করে দিচ্ছি।

পার্লামেন্টে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যহীনতার অভিযোগ তোলেন। ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে- সে কথার পুনরাবৃত্তি করেন তিনি।

তার কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে কাসিম সুরি বলেন, কোনো বিদেশি শক্তিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত করতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব গত ৮ মার্চ উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং এটি আইন ও সংবিধান অনুযায়ী হওয়া উচিত।

ইমরান খান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানান, তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ায় এখন আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে বিরোধীরা এই রায় মানতে অস্বীকার করে সুপ্রিম কোর্টে এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেছে। সোমবার (৪ মার্চ) মামলার শুনানি হবে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খাজা হারিস আল জাজিরাকে বলেছেন, আমার কোনো সন্দেহ নেই যে আদালত সরকারের সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করবে। তিনি বলেন, আদালত স্পিকারকে অনাস্থা ভোটেই যেতে বলতে পারে।

বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, আমরা নতুন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আমরা নিয়ম ও সংবিধান লঙ্ঘন হবে।

পাকিস্তানের সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ হারিস বলেন, অনাস্থা প্রস্তাবের প্রক্রিয়া ভোট ছাড়া এই পদ্ধতিতে শেষ করা যাবে না।

হারিস বলেন, যদিও অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি রোববার (৩ এপ্রিল) হওয়ার কথা ছিল। আদালত পরবর্তী তারিখে ভোট হওয়ার নির্দেশ দিতে পারে। অচলাবস্থা দেখা দিলে দেশের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিতে পারে।

সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, অনাস্থা প্রস্তাবে সংসদে যা ঘটেছে তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

২০১৮ সালে সেনাদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন ইমরান। সামরিক বাহিনী আপাতদৃষ্টিতে এখন ইমরানের পক্ষে সমর্থন প্রত্যাহার করেছে।

সূত্র: আল-জাজিরা, ডন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *