ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর আগে রুশ সেনারা যেখানে ছিল, সেখানেই তাদের ফিরে যেতে হবে। রাশিয়ার সঙ্গে যে কোনো শান্তি চুক্তি তার ওপরই নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর বিবিসির
লন্ডনভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থা চ্যাথাম হাউসের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, শান্তি চুক্তির ব্যাপারে তার দেশের জন্য ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য অবস্থান হলো- সমঝোতার জন্য রুশ সেনাদের যুদ্ধ-পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে যেতে হবে। অর্থাৎ ২৩ ফেব্রুয়ারির অবস্থায় ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, আমি ইউক্রেনের জনগণের ভোটে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছি, আমি কোনো মিনি-ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নই। তবে ২০১৪ সালে রাশিয়া যে ক্রিমিয়া দখল করেছিল সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় আসার জন্য ক্রিমিয়া ফিরে পাওয়ার বিষয়ে অত জোরাজুরি করবেন না- সে ইঙ্গিত জেলেনস্কির বক্তব্যে পাওয়া গেছে।
রাশিয়া এখন ইউক্রেনের মারিউপোল শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের এই শহরটির বিশাল ইস্পাত কারখানা আজভস্টাল স্টিল ওয়ার্কসে এখনো কিছু ইউক্রেনীয় সৈনা ও বেসামরিক মানুষ রয়ে গেছে। সেখানে রুশরা এখন আক্রমণ চালাচ্ছে।
রাশিয়া যদি মারিউপোলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, গত দু’মাসের যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য এটি হবে সবচেয়ে বড় অর্জন। আগামী ৯ মে রাশিয়ার বিজয় দিবস। দিবসটি উদ্যাপনে কয়েকদিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ৯ মে দিবসটি পালন করবে রাশিয়া। ১৯৪৫ সালে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে এনেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। মস্কোর রেড স্কয়ারজুড়ে সেনাদের কুচকাওয়াজ এবং সামরিক অস্ত্রাগার ও আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শর করে তারা।
তবে কিয়েভ থেকে লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে দেওয়া বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া ইউক্রেনের যেসব এলাকা দখল করেছে, সেগুলো তাদের দখলে রেখে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না।
জেলেনস্কি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপ পুনরায় শুরুরও আহ্বান জানান। তবে রাশিয়া বলছে, এই শান্তি প্রক্রিয়া এখন একটি ‘অচলাবস্থার’ মধ্যে পড়েছে।