আইপিএলের পঞ্চদশ আসরের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে একবারের চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান রয়্যালস ও টুর্নামেন্টের নতুন দল গুজরাট টাইটান্স। আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।
২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরের শিরোপা জিতেছিলো রাজস্থান। আসরে রাজস্থানের অধিনায়ক ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন। দীর্ঘ দিন পর দ্বিতীয় বার শিরোপা জিততে চায় দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দলটি।
অন্য দিকে প্রথমবারের মত আইপিএল খেলতে নেমেই বাজিমাত করেছে গুজরাট। ফাইনালে রাজস্থানকে হারিয়ে অভিষেক আইপিএলেই শিরোপা ঘরে তুলতে চায় তারা।
ওয়ার্নারের হতাশাজনক মৃত্যুর এক সপ্তাহ পরই আইপিএল মিশন শুরু করে রাজস্থান। এ বছর আবারো শিরোপার জয়ের অগ্নি পরীক্ষায় তারা।
চলমান আইপিএল ও রাজস্থানের সেরা ব্যাটার ইংল্যান্ডের জস বাটলার। ১৬ ইনিংসে ৪টি সেঞ্চুরিতে ৮২৪ রান করেছেন তিনি। ফাইনালের আগে বাটলার বলেন, ‘শেন ওয়ার্ন, রাজস্থান দলে খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তি। প্রথম আসরে দলকে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন তিনি।’
বাটলার আরো বলেন, ‘আমরা তাকে খুব মিস করবো। কিন্তু আমরা জানি, এই দলটি নিয়ে অনেক গর্ব করতেন তিনি।’
নক আউট পর্বে দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষেও ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন বাটলার। তার ব্যাটিং নৈপুন্যে ২০০৮ সালে শিরোপা জয়ের পর আবারো ফাইনালে উঠে রাজস্থান।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে এবারের আসরে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে ১০৬ রানে অপরাজিত থাকেন বাটলার। এই ইনিংসের সুবাদে আইপিএলে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিতে বিরাট কোহলির সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষ স্থান দখলে নেন তিনি। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৮২৪ রান করেছেন এই ব্যাটার।
লিগ পর্বে টেবিলের শীর্ষে ছিলো হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট। দলটি প্রমান করেছে, তাদের হারানো যেকোন দলের জন্যই কঠিন ছিলো। প্রথম প্লে অফে রাজস্থানকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠে তারা।
ফাইনাল নিয়ে রাজস্থানের প্রধান কোচ কুমার সাঙ্গাকারা বলেন, ‘সত্যিই এটি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। পান্ডিয়া অসাধারণ খেলোয়াড়। দলকে ভালোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে সে। রাজস্থান ব্যতিক্রমী দল। অত্যন্ত দক্ষ ও ভারসাম্যপূর্ণ, পুরো আসরে ধারাবাহিকভাবে সেরা পারফর্ম করেছে।’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম আহমেদাবাদে নিজেদের ঘরের মাঠে খেলবে গুজরাট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নবাগত দল লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে জয়ের পর থেকেই শক্তিশালী দল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ভেঞ্চার ফান্ড সিভিসি ক্যাপিটালের মালিকানাধীন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট। প্রথম দল হিসেবে প্লে অফও নিশ্চিত করে তারা।
গুজরাটের মিডল অর্ডারে বড় শক্তি দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার ও ভারতের রাহুল তেওয়াটিয়া। কঠিন পরিস্থিতি থেকে অনেক ম্যাচেই গুজরাটকে সাফল্য এনে দিয়েছেন তারা। গুজরাটের সাফল্যের বড় চাবিকাঠি মিডল অর্ডারের এই জুটি।
কলকাতায় হওয়া প্রথম কোয়ালিফায়ারে রাজস্থানের বিপক্ষে অনবদ্য ৬৮ রান করে ৭ উইকেটের জয়ে গুজরাটকে ফাইনালে তুলেন হার্ড হিটার নামে পরিচিত বাঁ হাতি ব্যাটার ‘কিলার’ মিলার।
গেল মাসে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ১ রানের জয়ের ম্যাচে শেষ দুই বলে দু’টি ছক্কা মেরেছিলেন তেওয়াটিয়া।
গুজরাটের বোলিং আক্রমনকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেসার মোহাম্মদ শামি। ১৫ ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে আছেন আফগানিস্তানের স্পিনার রশিদ খান।
বল হাতে ১৮ উইকেট নিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি রশিদ, ব্যাট হাতেও প্রয়োজনীয় সময়ে দলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। লিগ পর্বে সানরাইজার্স হায়দারাবাদের বিপক্ষে ১৯৬ রান তাড়া করা ম্যাচের শেষ দুই বলে ছক্কা মেরে দলকে জয় এনে দেন রশিদ। ঐ ম্যাচে ২১ বলে অনবদ্য ৪০ রানের ইনিংস খেলে গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখেন তেওয়াটিয়া। ১১ বলে ৪টি চারে অপরাজিত ৩১ রান করেছিলেন রশিদ।
রশিদ বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দলে ভারসাম্য। যা এই অবস্থায় আসতে আমাদের অনেক বেশি সহায়তা করেছে। খেলোয়াড়দের মানসিকতা ইতিবাচক, জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না কেউ।’