ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় অভিযুক্ত সৌদি আরবের ২৬ নাগরিকের অনুপস্থিতিতে বিচার স্থগিত করে দিয়েছে তুরস্কের একটি আদালত। মামলাটি এখন সৌদি আরবের কাছে হস্তান্তর করা হবে।-খবর আল-জাজিরার
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে এই সাংবাদিককে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছে।
মামলাটি সৌদির কাছে হস্তান্তর করা উচিত বলে গত সপ্তাহে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের কৌঁসুলি। পরবর্তী সময়ে তুরস্কের বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কৌঁসুলির অনুরোধে সায় দেবে সরকার।
মামলাটি সৌদির কাছে হস্তান্তরে গত ৩১ মার্চ অনুরোধ জানিয়েছিলেন কৌঁসুলি। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) তাতে সায় দিয়ে ইস্তানবুলের আদালত জানিয়েছে, আমরা বিচার স্থগিত করে তা সৌদি আরবের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
যদিও তুরস্ক সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে হুঁশিয়ারি করে দিয়েছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। তারা বলছে, মামলাটি সৌদি সরকারের হাতে গেলে তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আড়াল করে দেবে।
অথচ ২০১৮ সালে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পর্ক রয়েছে।
খাসোগির বাগদত্তা খাদিজা সেনজিস বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করবেন। সৌদি আরবের মতো কোনো পরিবারশাসিত দেশ না তুরস্ক। নাগরিকদের দুর্দশা লাঘবে আমাদের একটি বিচার ব্যবস্থা আছে। কাজেই আইন মেনেই আমরা আপিল করতে যাচ্ছি।
সৌদিসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করতে চাচ্ছে তুরস্ক। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে বুধবার তুরস্ক সরকারকে অনুরোধ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
সংস্থাটি বলছে, খাসোগি হত্যার বিচার তুরস্ক থেকে সৌদি আরবে হস্তান্তরিত হলে তাতে ন্যায়বিচারের সম্ভাবনার অবসান ঘটবে। এছাড়া যে কোনো হত্যাযজ্ঞের অপরাধ থেকে পার পেয়ে যাওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়ে যাবে সৌদি কর্তৃপক্ষের।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপ-পরিচালক মাইকেল পেজ বলেন, তুরস্কের কর্তৃপক্ষের উচিত সিদ্ধান্তটি থেকে সরে আসা। সৌদি আরবের দায়মুক্তির প্রবণতা আরও জোরদার করতে কোনো অবদান রাখা উচিত হবে না তাদের। খাসোগি হত্যার মামলা তাদের হাতেই স্থানান্তরিত হবে, যারা এর সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।