কানাডার পূর্বাঞ্চলীয় অন্টারিও ও কুইবেক প্রদেশে প্রবল বজ্রঝড় আঘাত হেনেছে। এতে প্রায় নয় লাখ বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। হাজার হাজার গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বিবিসি।
স্থানীয় সময় শনিবার পাশাপাশি দুই প্রদেশে আঘাত হানে বজ্রঝড়। কানাডার আবহাওয়া বিভাগ এনভার্নমেন্ট কানাডার তথ্যমতে, ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৮২ মাইল তথা ১৩২ কিলোমিটার।
যে শহরগুলোতে ঝড় হয়েছে সেগুলো হলো অটোয়া, হ্যামিলটন, টরন্টো, মিল্টন, বার্লিংটন, ব্রাম্পটন, ওকভিল, মিসিসাগা, ভন, রিচমন্ড হিল, মারখাম, ইরিন, হাল্টন হিলস, অ্যানকাস্টার, দুন্দাস, ক্যালেডন ইত্যাদি।
গ্রীষ্মকালীন শক্তিশালী বজ্রঝড়ের কারণে গাছ উপড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অটোয়া নদীতে নৌকা ডুবে মারা গেছেন এক নারী।
অন্টারিও পুলিশ টুইটারে বলেছে, গাছ উপড়ে পড়ে ট্রেলারের ওপর দাঁড়ানো এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, সত্তোরোর্ধ এক নারী হাঁটার সময় গাছ ভেঙে পড়লে তার মৃত্যু হয় এবং অটোয়ায় ঝড়ের কবলে পড়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। অপর এক পঞ্চাশোর্ধ নারী অটোয়া নদীতে ঝড়ের মধ্যে নৌকাডুবিতে মারা গেছেন।
স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী হাইড্রো ওয়ান এবং হাইড্রো কুইবেক জানায়, শনিবার রাতেই দুই প্রদেশের প্রায় নয় লাখ বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এসব বাড়িতে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে কয়েকদিন সময় লেগে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শক্তিশালী এ বজ্রঝড় মাত্র দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছিল। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অনেকে ক্যাম্পিংসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে সময় কাটাচ্ছিল। বিভিন্ন জায়গায় গ্রীষ্মের আগে টিউলিপ ফুল উৎসব চলছিল। ফলে অনেকে ঝড়ের সময় ঘরের বাইরে ছিল। লেক অন্টারিওতে অনেকে বোটিং করছিলেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ অনেককেই লেক অন্টারিও থেকে উদ্ধার করে।
বাংলাদেশিদের মধ্যে কোনো মৃত্যুর খবর না পাওয়া গেলেও অনেকে বেশ দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। অটোয়া থেকে জাকি হাসান জানান, বিকেলে ঘরের বাইরে ছিলেন, ঝড় শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সেলফোনে ঝড়ের অ্যালার্ট পাঠানো হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগে ঝড় শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, ‘প্রচণ্ড বজ্রঝড়ের কারণে শহরের বিদ্যুৎ চলে যায়, রাস্তায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরি। রাত ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি।’
বেশ কিছু শহরে বিদ্যুৎ না থাকায় রাস্তার সিগনাল কাজ করছে না। ফলে যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন সময় লেগে যাতে পারে।