এপ্রিল ১২, ২০২২ ১০:২২ পূর্বাহ্ণ
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে জঙ্গিরা। বিশেষ করে আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে বেড়ে গেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের তৎপরতা। বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদন বলছে, এলাকাটিতে হঠাৎ করেই আত্মঘাতী হামলা বেড়ে গেছে। টার্গেট করা হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে।
সম্প্রতি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আফগান সীমান্তের কাছে একটি মসজিদে নামাজ চলাকালে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে নিহত হন অন্তত ৬৩ জন। পরে তালেবান জানায়, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস ওই হামলা চালিয়েছে। আইএস নেতা জুলায়বিব আল কাবুলির নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদন বলছে, গত বছর তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের তৎপরতা বেড়েছে। বিশেষ করে নানগারহার প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় শক্তিশালী হয়ে উঠছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। এসব এলাকায় প্রায়ই আত্মঘাতী হামলার পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে তারা। গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে গাছে ঝুলিয়ে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করে আইএস।
জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের তৎপরতার বিষয়ে সরাসরি স্বীকার না করলেও তালেবান সরকার বলছে, কিছু এলাকায় নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতেই এসব হামলা। তাদের দমনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলেও দাবি তালেবান কর্মকর্তাদের।
তালেবানের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার বসির বলেন, সন্ত্রাসীরা বিচ্ছিন্ন কিছু জায়গায় হামলা চালিয়েছে। মানুষকে হত্যা করে এক ধরনের ভীতির পরিবেশ তৈরি চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু আমরা সেটা হতে দেব না। তারা এখানে কিছু আবাসিক এলাকায় আত্মগোপনে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও পার্বত্য এলাকা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাদের বড় ধরনের কিছু করার ক্ষমতা নেই।
আইএসের উত্থান নিরাপত্তা নিয়ে শংকা তৈরি করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই তাদের নির্মূল করা না গেলে ওই অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চরম হুমকিতে পড়বে।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষক আমির রানা বলেন, পাকিস্তানের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় হুমকি আইএস। তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের পরিবর্তন করছে। তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর আইএস মরিয়া হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র আফগানিস্তান নয় পাকিস্তানে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের প্রধান টার্গেট সংখ্যালঘুরা।
শুধু জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস নয়, লস্কর-ই তাইয়্যেবা, চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইস্ট তুর্কিস্তান এবং ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তানের মতো বিভিন্ন কট্টরপন্থী গোষ্ঠী আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে উঠছে। এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে শঙ্কা নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের।