অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবু জাফর সিদ্দিকীসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ২১৫ জন নেতা একযোগে পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১২ মে) তারা পদত্যাগ করেন। পদত্যাগকারী নেতাদের মধ্যে এলডিপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাই রয়েছেন ১৭ জন। ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্র অলি আহমেদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পদত্যাগী নেতারা।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণপদত্যাগের বিষয়টি জানানো হয়।
যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফরিদ আমিন, যুগ্ম মহাসচিব তমিজ উদ্দিন (টিটু), সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মো. ইব্রাহিম রওনক, প্রচার সম্পাদক আফজাল হোসেন, যুববিষয়ক সম্পাদক শফিউল বারী, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক লস্কর হারুনুর রশিদ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন মণ্ডল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান, গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বাবু, সদস্যসচিব মোহাম্মদ ফয়সাল ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইমাম হোসেন পাঠান বিপ্লব উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া এলডিপির যুববিষয়ক সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব দলের ১০১ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ছাড়া ১০০ জনই পদত্যাগ করেছেন। সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক ওলামা দলের ২৫ সদস্যের কমিটির ২৩ জন পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে ৭৫ সদস্যের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদ্য পদত্যাগ করা এলডিপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবু জাফর সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, এলডিপিতে গণতন্ত্রচর্চার কোনো সুযোগ নেই। সব সিদ্ধান্ত তিনি (অলি আহমদ) একাই নেন। এসব অনেক কথাবার্তা হলেও তিনি কাউকে পাত্তা দেন না।
আবু জাফর সিদ্দিকী আরও বলেন, দল প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরের এই দীর্ঘ সময়ে দেশের রাজনীতিতে অনেক উত্থান-পতন এসেছে। এরমধ্যে অলি আহমদ এলডিপিকে একটি রহস্যজনক রাজনৈতিক দল হিসেবে ব্যবহার করছেন। নিয়মিত বিরতিতে রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টানোর কারণে এরই মধ্যে দলের প্রতিষ্ঠাকালের জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব পদত্যাগ করেছেন। দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারা থেকে অলি আহমদ সরে আসেননি। বরং দিনে-দিনে একটি সুপরিচিত রাজনৈতিক দলকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছেন। দলকে রাজনৈতিক অঙ্গনে হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ফলে বাধ্য হয়েই আমরা পদত্যাগ করেছি।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে বিএনপি থেকে বের হয়ে এলডিপি গঠন করেন অলি আহমেদ। তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিএনপি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
এদিকে, অলি আহমদ সিঙ্গাপুরে অবস্থান করায় তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে নেতাদের পদত্যাগের বিষয়ে অলি আহমদের পক্ষে এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন রাজ্জাক এক বিবৃতিতে বলেছেন, দুষ্কৃতকারীরা দল ছাড়ায় এলডিপি পূতপবিত্র হয়েছে। অলি আহমদ ও রেদোয়ান আহমেদ হচ্ছেন দলের ফোকাস। এর বাইরে কে গেল, কে এল তা বিবেচ্য না।