দুর্নীতি ও বৈষম্য নির্মূল করলেই শেরপুরের উন্নয়ন সম্ভব

মতামত স্পেশাল স্লাইড

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪ ৮:৩৭ অপরাহ্ণ

এস এইচ শাকিল।।

দুর্নীতি দূর করে বৈষম্য নিরসন নিশ্চিত করলেই শেরপুরের উন্নয়ন সম্ভব বলে মত প্রকাশ করেছেন শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহমেদ।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় মালিবাগস্থ শাহ জালাল কমপ্লেক্সের বীকন মিলনায়তনে শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত ‘শেরপুর জেলা নাগরিক সংলাপ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিবাজদের শুধু রূপ পাল্টিয়েছে। সরকার পতনের পর যেভাবে চাঁদাবাজি আর দখলদারিত্ব চলছে তাতে করে ছাত্র-জনতার হাজার প্রাণের অবদান বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব লুটপাটকারী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে নাগরিক সমাজকে। শেরপুরের ছাত্র-জনতাকে একতাবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে এই দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে।

তিনি আরো বলেন, শেরপুরের এলজিডিতে দুর্নীতি-অনিয়ম চলমান আছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৃষিসমৃদ্ধ শেরপুর জেলাকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) এর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য শাহ মো: আবুরায়হান আলবেরুনী।

দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে বৈষম্য নিরসন করলেই শেরপুরের উন্নয়ন সম্ভব

আলবেরুনী বলেন, শেরপুরকে আমরা আর পিছিয়ে থাকতে দিতে পারি না। শেরপুরের উন্নয়নের স্বার্থে সকলের একজোট হওয়া এখন সময়ের দাবি। বিশেষ করে আমাদের জেলার যারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তাদের নিয়ে একটি উন্নয়ন পরিষদ গঠন করা যেতে পারে। শেরপুরকে কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সে ব্যাপারে তারা দিকনির্দেশনা দেবেন।

তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনসহ আহতদের সুচিকিৎসার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান।

শাশ্বত মনির বলেন, শেরপুরে বড় নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণেই বারবার উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়েছে। আবার অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ থাকলেও সে অনুযায়ী শেরপুরের উন্নয়ন ঘটেনি।  তাই দলমত নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে সবথেকে বেশি ধান উৎপন্ন হয় শেরপুর জেলায়। শেরপুরের তুলশীমালার ধান জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শেরপুরের পর্যটনখাত গুলোকে তুলে ধরতে পারলে রাজস্ব খাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও নাকুগাঁও স্থলবন্দরকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হলে দেশের আমদানি ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে।

এসময় তিনি জাতির ক্রান্তিলগ্নে শেরপুরের কৃতী সন্তান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সেজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানান। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণেই দেশে আজ স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।

হারুন অর রশীদ বলেন, শেরপুর জেলাভিত্তিক যেসব সংগঠন রয়েছে তাদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। শুধুমাত্র সভা-সেমিনার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলোকে খুজে বের করতে হবে এবং সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে তার সমাধান করতে হবে। সেইসাথে আমাদের সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে তুলে ধরতে হবে এবং শেরপুরবাসীকে দলমত নির্বিশেষে একাত্মতা প্রকাশ করে সার্বিক উন্নয়নে সচেষ্ট থাকতে হবে।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঝিনাইগাতীর উত্তরণ স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ, দৈনিক আমাদের দিন পত্রিকার ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি মুরাদ শাহ জাবাল, খালিদ রহমান খুশবু, শাহাদাত হোসেন শাকিল প্রমুখ।

এছাড়া সভায় নেজাব উদ্দিন সাজু, কে এম সাখাওয়াত হোসেন, জোবায়ের হোসেন, আব্দুল জব্বার সজল, রাশেদুল ইসলাম তুহিন, শরীফ সালেহীন, মো. মাহেদী হাসান, রেজাউল করিম শানু, মাহমুদুর রহমান নোবেল, মো. ফেরদৌস, নিলুফার ইয়াসমিন, মাছুমা আক্তার, ইঞ্জি. রাজীব চক্রবর্তী, ফরিদ মণ্ডল, জেসমিন আক্তার দীপা, মো. জীবন, মো. সাইফ, নোমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *