প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে লন্ডভন্ড পিরোজপুর জেলা

দেশজুড়ে

মে ৩০, ২০২৪ ১০:০৫ অপরাহ্ণ

সোহেল রায়হান – নেছারাবাদ, পিরোজপুর

প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে লন্ডভন্ড পিরোজপুর জেলার কাউখালি, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ, নাজিরপুর সহ পুরো জেলা। গত ২৬ ও ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমাল অতিক্রম করেছে পুরো দক্ষিণ বঙ্গ। এসময় ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পুরো এলাকার সহস্রাধিক ঘর-বাড়ী। শত বছরের রেকর্ড পরিমান পানিতে প্লাবিত হয়ে মাছের ঘের,পুকুর, মুরগির খামার, কাঁচা পাঁকা ঘর-বাড়ী রাস্তা ঘাট,বৈদ্যুতিক সংযোগ সহ লক্ষাধিক মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে, গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে অর্ধ লক্ষ্য পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় শুরুর পূর্বেই উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে মাইকিং করে এবং সকল মানুষের নিরাপত্তামূলক ব্যাবস্থা গ্রহনে সচেষ্ট ভূমিকা পালন করেন। দূর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারী,বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ,বিভিন্ন ক্লাব সহ সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাড়িয়ে স্বাধ্যমতো সহযোগিতা করেছেন।নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা আজরীন তন্নী নিজ উদ্যোগে এই এলাকার পানি বন্দি মানুষের জন্য শুকনা খাবার ও খিচুড়ি সহ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেছেন। এদিকে খামারী,মাছের ঘের মালিক,ও উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত।জানা গেছে ঐ সকল মাছ চাষী ও খামারীরা বিভিন্ন ব্যাংক,এনজিও ও স্থানীয় সুদী ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চড়া সুদে স্বপ্ন বুনেছিলেন ঘেরের পানিতে। মাত্র কয়েক ঘন্টার প্লাবনে সেই স্বপ্ন বন্যায় ভেসে গেছে। বাকী আছে শুধু ঋনের বোঝা। রিমেলের তান্ডবে বর্তমানে নদী নালা,খাল বীল,রুপ নিয়েছে মাছের ঘেরে।
এ ব্যাপারে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক মহোদয় উপজেলায় এসে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন এবং উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বলেন- ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষী ও পল্ট্রি খামারী সহ উদ্যোক্তাদের অতি দ্রুত সহজ সরল প্রক্রিয়ায় সরকারের ঋন সুবিধা দেওয়ার ব্যাবস্থা করা হবে।
ইতিমধ্যে এলাকার সকল রাস্তাঘাট,বৈদ্যুতিক সংযোগ সহ সকল ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া চলমান এবং যাদের ঘর বাড়ী বেশি পরিমানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও সরকারী তহবিলের মাধ্যমে লিস্ট করে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য এ যাবৎকালের বন্যায় এবারই প্রথম এই এলাকায় তথা কাউখালি, ভান্ডারিয়া,নেছারাবাদ,নাজিরপুর সহ পুরো পিরোজপুর জেলায় রেকর্ড পরিমান জলোচ্ছ্বাস প্লাবিত হয়েছে। যা সাভাবিক পানির স্তর থেকে ৬/৭ ফুট বেশি উচ্চতায় প্লাবিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *