বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যের ঘটনা আরও গবেষণা করতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যের ঘটনা আরও গবেষণা করতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতীয়

আগস্ট ১৬, ২০২৩ ৫:৫৭ অপরাহ্ণ

ডেমোক্রেটিক করেসপন্ডেন্ট।।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যের ঘটনাগুলো আরও গবেষণা করে বের করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে কোন কোন দেশের কূটনীতিকরা ঢাকায় আনাগোনা করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে কোন কোন দেশের লোকেরা কী কী বলেছিলেন এসব নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা উচিত।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে জাতির পিতার ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে দেশে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছিল। বাসন্তীর কাহিনি প্রচার করা হয়েছিল। তখন বহু লোক দেশে আনাগোনা শুরু করে এবং একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আজকের বাংলাদেশেও সেরকম একটা অস্থিরতা সৃষ্টির প্রয়াস চলছে। ওই সময়ের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের একটা সাদৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভাবনীয় অগ্রগতির পরেও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে আমরা যে ধরনের অস্থিরতা দেখেছিলাম, মনে হয় এখনো সে ধরনের অবস্থা সৃষ্টির জন্য কেউ কেউ উঠে পড়ে লেগেছে। সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিভিন্ন ধরনের যে অপপ্রচার শুরু হয়েছে তা প্রতিহত করতে আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে। ৭৫-এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শ, একটি চেতনা, একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন, একটি জাতিসত্তা সৃষ্টি করে গেছেন। শুধু একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র তৈরি করেই তিনি ক্ষান্ত হননি, মাত্র সাড়ে তিন বছরে একটা সদ্য স্বাধীন দেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন জাতির পিতা সব করে গেছেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে যতগুলো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ছিল, অল্পদিনে সবগুলোর সদস্যপদ অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। এমনকি জাতিসংঘের সদস্যপদও বাংলাদেশ অর্জন করতে সক্ষম হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর খুব কম দেশ আছে যারা এত অল্প সময়ের মধ্যে এতগুলো রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং তার ব্যক্তিত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছিল। শুধু স্বীকৃতি অর্জন নয়, মাত্র দু’মাসের মাথায় বন্ধুপ্রতিম ভারতের সৈন্যদের ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন। খুব কম দেশেই এ ধরনের নিদর্শন আছে। এ জাতিকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু মাত্র ৯ মাসের মধ্যে একটি সুন্দর, শক্তিশালী সংবিধান দিয়ে গেছেন। পৃথিবীর খুব কম দেশেই এত অল্প সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়নের নজির আছে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে- শিক্ষা ক্ষেত্রে, শিল্প ক্ষেত্রে, কৃষি ক্ষেত্রে এমনকি সব ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু যে পরিকল্পনা তৈরি করে গেছেন আজ শেখ হাসিনা সে পথ ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন। এ কারণে দেশের উন্নয়নও ত্বরান্বিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে যাননি, তিনি আমাদের হৃদয়ে একটি স্বপ্ন দিয়ে গেছেন। আর সেই স্বপ্ন হলো সোনার বাংলার স্বপ্ন। একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী অর্থনীতি, যেখানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য নিশ্চিত হবে। তার সেই স্বপ্ন অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আমীর হোসেন আমু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *