ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪ ৯:২০ পূর্বাহ্ণ
বর্তমান বিশ্বে মানব জীবনের এমন একটাও মুহূর্ত নেই যে প্রযুক্তির দারস্থ হতে হয় না। প্রতিনিয়ত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে প্রযুক্তির দুনিয়া। মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে এবং করবে এই পরিবর্তন।
আগামী ১০ বছরে প্রযুক্তি কীভাবে মানুষের জীবন ও পরিবেশকে প্রভাবিত করবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী করা না গেলেও কিছুটা ধারণা করাই যায়। আগামী দশকে সম্ভাব্য যেসব প্রযুক্তি পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে সে সম্পর্কে একটু জেনে নেয়া যাক।
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই): এআই এখন আর সায়েন্স ফিকশন সিনেমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, মানুষের জীবনকে ঘিরে রয়েছে। আগামী দশকে এআই বিশ্বের প্রতিটি দিককে স্পর্শ করবে। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, উন্নত কাস্টমার সার্ভিস থেকে শুরু করে মৃত ব্যক্তির কণ্ঠ অনুকরণ পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে এআই।
২. ফাইভ জি নেটওয়ার্ক: যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক। স্মার্ট শহর, দূরবর্তী সার্জারি এবং কম্পিউটার নির্মিত ত্রিমাত্রিক চিত্রের উন্নত অভিজ্ঞতা দেবে এই ফাইভ জি নেটওয়ার্ক। এর ইন্টারনেট সেবা দ্রুত গতি এবং কল বার বার আটকে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
৩. মেটাভার্স: মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল জগতে ব্যবহারকারীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। এই প্রযুক্তি খুব দ্রুত উন্নত হচ্ছে। মেটার মতো কোম্পানিগুলো এই জায়গায় প্রচুর বিনিয়োগ করছে। অদূর ভবিষ্যতে কীভাবে সামাজিকীকরণ হবে, কীভাবে ভার্চ্যুয়াল জগতে মানুষ একসঙ্গে কাজ করবে, তার সম্ভাবনা তুলে ধরছে এই মেটাভার্স প্রযুক্তি।
৪. সবুজ প্রযুক্তি: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য টেকসই প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো গ্রিন টেকনোলজিতে প্রচুর বিনিয়োগ করছে। যেমন বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং নবায়নযোগ্য শক্তি।
গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়, এটি পরবর্তী ৭ বছরে বার্ষিক ১৭.২ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
৫. স্বাস্থ্যসেবা: পরবর্তী দশকে বায়োটেকনোলজি ও স্বাস্থ্যসেবায় যুগান্তকারী অগ্রগতি হবে। সম্প্রতি মানুষের মস্তিষ্কে প্রথমবারের মতো চিপ স্থাপন করেছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান নিউরোলিংক। স্বাস্থ্যসেবায় এই ধরনের আরও উদ্যোগ দেখা যাবে। নির্ভুল ওষুধ, জিন সম্পাদনা ও টেলিমেডিসিন এর কয়েকটি উদাহরণ।
৬. সাইবার নিরাপত্তা: ক্রমবর্ধমান ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সঙ্গে, শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। সাইবার আক্রমণ দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তাই বিশ্বব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা বাজার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
৭. মহাকাশ গবেষণা: মহাকাশ গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছে স্পেসএক্স ও ব্লু অরিজিনের মতো বেসরকারি সংস্থাগুলো। মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর মতো মিশন ও বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণের সাক্ষী হতে পারে পরবর্তী দশক। এর ফলে পৃথিবীর বাইরেও অন্য গ্রহে মানুষের বসবাসের সম্ভাবনার নতুন যুগের সূচনা করবে।
৮. অনলাইন শিক্ষা: কোভিড-১৯ মহামারি অনলাইন শিক্ষা প্রযুক্তিকে ত্বরান্বিত করেছে। মহামারি কমে গেলেও এর প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেখার গুণগত মানের উৎকর্ষ সাধন হয়েছে। এছাড়া নতুন কিছু শিখার আগ্রহ মেটায় অনলাইন কোর্স।