সোহরাওয়ার্দী কলেজে সুপেয় পানির ভোগান্তি

দেশজুড়ে

জুন ৬, ২০২৩ ৮:০৩ অপরাহ্ণ

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

এখন গ্রীষ্মকাল। বাহিরে রোদের খরতাপ এবং সঙ্গে ব‌ইছে গরম হাওয়া। গরমে জীবন হয়ে উঠছে অতিষ্ঠ। শরীর ঘেমে বের হয়ে যাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে পানি। শরীরে পানির অভাব পূরণে দরকার বিশুদ্ধ সুপেয় পানি। কিন্তু সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। কারণ হিসেবে অধ্যক্ষ কিছু উল্লেখ না করলেও ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে ঠিকই সাংবাদিককে এড়িয়ে গেছেন। বিদ্যাপীঠে প্রায় প্রতিদিনই কয়েক শত শিক্ষার্থী ক্লাস-পরীক্ষাসহ অন্যান্য কাজে আসেন।

কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন বিভিন্ন কাজে কিন্তু সঙ্গে অতিরিক্ত গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন পড়ছে প্রচুর পরিমাণে সুপেয় পানি। নতুন, পুরাতন মিলিয়ে এ বিদ্যাপীঠের ভবন সংখ্যা তিনটি। যেখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে ক্যাম্পাসের আঙ্গিনায় নিচতলায় সিঁড়ির পাশে। মাত্র একটি ট্যাপের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীরা তাদের খাবার পানির চাহিদা পূরণ করে। তার সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে রিজার্ভ ট্যাংকির পানিতে দুর্গন্ধযুক্ত ও তা খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ার ক্যাম্পাসে অবস্থানরত কর্মচারীদের সন্তানদের যারা এ পানি ব্যবহার করে আসছে তাদের বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত ও চর্ম রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকায় প্রায় দিনই সর্বোচ্চ ৩৫° থেকে ৩৭° সেলসিয়াস তাপমাত্রা যাচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতা অনেক বেশি। রোদের তেজ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে গরমের তীব্রতা। যা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির মধ্যে ফেলছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় কোন বিভাগ কিংবা ভবনেও নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা বলছে তাদের পানি খেতে যেতে হয় সিঁড়ির পাশে নিচতলায়। সেখানে একটি মাত্র ট্যাপ ব্যবহার করে সকল শিক্ষার্থী তৃষ্ণা নিবারণ করে থাকে কাজেই সেখানে প্রায় সময়ই ভিড় লেগে থাকে।

এছাড়াও অভিযোগ উঠেছে রির্জাভ ট্যাংকির পানির সঙ্গে বাথরুমের টাংকির লাইন একত্রিত হয়ে গেছে। যার ফলে রির্জাভ ট্যাংকির পানির দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় ক্যাম্পাসে অবস্থানরত কর্মচারী যারা এ পানি ব্যবহার করছে তাদের সন্তানদের সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরনের পানিবাহিত ও চর্ম রোগের। পাম্প লাইনে দায়িত্বরত বিল্লাল জানান, পানির ট্যাংকির সাথে বাথরুমের লাইন এডজাষ্ট হয়ে গেছে। অফিস সহকারী শহীদ জানান, দীর্ঘ দিন ধরে এমন দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহার করছি । আমাদের বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কলেজ কতৃপক্ষে জেনে বুঝে এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমার সাংবাদিক সমিতির মাধ্যমে দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি চাই। ইসলামিক ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকা জান্নাত বলেন, পানি বিশুদ্ধকরণ এ মেশিনটি কতটা কার্যকর আমাদের তা জানা নেই। মাঝে মধ্যে আমরা এ ট্যাপ থেকেও পানি খাই‌, যেখানে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়াও দুপুরের সময় দীর্ঘ লাইন থাকে ওখানে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী চৌধুরী মোঃ নাইমুর ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার জন্যে ক্লাস শেষ করে এসেছিলাম মুখ ধোঁয়ার জন্যে কিন্তু ট্যাপের পানিতে প্রচুর দুর্গন্ধ থাকায় এ পানি ব্যবহার করতে পারিনি। প্রশাসনের কাছে তিনি দ্রুত এ সমস্যা নিষ্পত্তির জন্যে আবেদন জানান। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর মুঠোফোনে বলেন, রিজার্ভ ট্যাংকির ব্যাপারে জানার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি কলের ট্যাপে লাল কাপড় বেঁধে সর্তক করে দেওয়া হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্যে একটি নোটিশও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১২ হাজার শিক্ষার্থীদের জন্যে একটি মাত্র ট্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে সুপেয় পান পানি করবার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি ডিপার্টমেন্টই রয়েছে বিশুদ্ধ পানি খাবার ব্যবস্থা।

এছাড়াও মসজিদ কিংবা দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতেও রয়েছে পানির ব্যবস্থা। সিঁড়ির পাশে যে খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে সেটা হচ্ছে অতিরিক্তভাবে করে দেওয়া হয়েছে। এর বাহিরেও আমরা আরও দুইটি খাবার পানির ট্যাপের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পরবর্তী এ বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন করতে গেলে তিনি সাংবাদিককে বলেন, ভাই আমি এই মুহুর্তে ব্যস্ত আছি। এছাড়াও লাইব্রেরীতে দায়িত্বরত কয়েকজনের থেকে জানা যায় তারাও একই দুর্ভোগের স্বীকার। গোসল করতে অসুবিধা হচ্ছে কখনও বাধ্য হয়ে গোসল করলেও বিভিন্ন ধরনের চুলকানিসহ চর্মরোগের সৃষ্টি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *