সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে মাঠে ৮ লাখ ফোর্স

সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে মাঠে ৮ লাখ ফোর্স

জাতীয় স্লাইড

জানুয়ারি ৭, ২০২৪ ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে জনগণকে নিরাপত্তা দিতে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য।

সরকারের পক্ষ থেকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয় আর তা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য। যা গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এক লাখ ৩০ হাজার বেশি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন সবকিছু করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। কেউ নাশকতা করে পার পাবে না। ইউনিফর্মে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য এবং সাদা পোশাকে ভোটকেন্দ্রের আশপাশেসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গোয়েন্দারা কাজ করছে।

নির্বাচনে ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র ও দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৫৬টি ভোটকক্ষ রয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ-আনসারের ১৫-১৭ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় পৌনে সাত লাখ সদস্য শুক্রবার মাঠে নেমেছেন। এদিন ৬৫৩ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও নেমেছেন। তারা নির্বাচনী অপরাধ দেখলে তাৎক্ষণিক সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার করবেন।

ভোটে চালকের আসনে ৬৬ রিটার্নিং অফিসার-

ভোট নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে চালকের ভূমিকায় ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর মধ্যে আছেন ৬৪টি জেলার ৬৪ জন জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুজন বিভাগীয় কমিশনার। ৪২ হাজারের ভোটকেন্দ্রে রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে পোলিং অফিসার পর্যন্ত লক্ষাধিক নির্বাচনী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। তার মধ্যে রয়েছেন ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার, ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং ৪২ হাজার ১৪৯ জন প্রিসাইডিং অফিসার। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি অর্গানোগ্রাম অনুসরণ করা হয়। রিটার্নিং অফিসারদের তত্ত্বাবধানেই সার্বিক ভোট প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়।

এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, যারা নির্বাচনে নাশকতার চেষ্টা করবে, মানুষের জানমালের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করবে, যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করবে, তাদের কঠোরভাবে দমন করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সুষ্ঠু ও নিরাপদে যাতে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সেই এই লক্ষ্যে র্যাব কাজ করছে। আমরা প্রতিটি গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে, রিটার্নিং অফিসার সহকারী রিটানিং অফিসার এবং নির্বাচনের কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটকেন্দ্র ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভোটদানে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সারাদেশে পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ জন সদস্য মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, সারাদেশে ৪২ হাজার ১৪৯টি ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা রক্ষায় পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার ৭৮৮ জন সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে এবং শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীসহ সারাদেশে এক হাজার ১৫৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আমাদের মোতায়েন করা জনবল সারাদেশে ৪৮৭টি বেইজ ক্যাম্প থেকে দায়িত্ব পালন করছে। বিজিবির ৭০০ পেট্রোল দিন-রাত টহল দিচ্ছে।

তিনি বলেন, সারাদেশে বিজিবির র্যাপিড অ্যাকশন টিম (র্যাট), ডগ স্কোয়াড কাজ করছে। এছাড়া, আমাদের কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত আছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই টিমের সদস্যদের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ-আনসার, প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসারা কাজ শুরু করেছেন। সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট, প্রশাসন মিলে আমরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে সবাই মিলে দায়িত্ব পালন করছি। আশা করি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হবো।

আইজিপি বলেন, স্ট্রাইকিং টিম, রিজার্ভ ফোর্স, মোবাইল টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ডগ স্কোয়াড, র্যাবের হেলিকপ্টারসহ সমগ্র জনবল নিয়ে প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন ঘিরে যে কোনো নাশকতা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নাশকতাকারীর তথ্য দিলে ২০ হাজার থেকে লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্যের গুরুত্ব অনুসারে সেই পুরস্কারের অর্থ ২-৩ লাখও হতে পারে। তবে তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রেখে, নাশকতাকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *