যেভাবে বুঝবেন আপনার ওপর ‘হজ’ ফরজ হয়েছে

যেভাবে বুঝবেন আপনার ওপর ‘হজ’ ফরজ হয়েছে

ধর্ম

মে ৯, ২০২৩ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘এই ঘরের হজ করা মানুষের ওপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত পৌঁছার’। (সূরা: আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭)

হজের ঘোষণা সম্পর্কিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘এবং মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটের পিঠে (সওয়ার হয়ে), তারা আসবে দূর-দূরান্তর পথ অতিক্রম করে। (সূরা: হজ, আয়াত: ২৭)

হজের ফজিলত সম্পর্কিত হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বাধিক উত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলের ওপর ঈমান আনয়ন করা। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, হজে মাবরুর বা মকবুল হজ আদায় করা’। (বুখারি শরিফ, হাদিস: ১৪২৯)

আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়’। (বুখারি : ১/২০৬)

হজ ফরজ হওয়ার পরও আদায় না করলে কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আল্লাহর রাসূল (সা.)। এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হজ ফরজ হওয়ার পর তা আদায় না করে মৃত্যুবরণ করা ইহুদি বা খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করার নামান্তর’। (তিরমিজি : ১/১৬৭)

তাই হজ ফরজ হলে তা আদায়ে গড়িমসি না করে সঠিক নিয়মে পালন করা উচিত। মূলত প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও মক্কায় গিয়ে হজকার্য সম্পন্ন করে ফিরে আসার সামর্থ্য রাখে, এমন প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ।

হজ ফরজ হওয়ার জন্য পাঁচ শর্ত

এক. মুসলিম হওয়া। দুই. বিবেকবান হওয়া, পাগল না হওয়া। তিন. বালেগ হওয়া, প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া। চার. আজাদ বা স্বাধীন হওয়া- অর্থাৎ কারো গোলাম বা দাস না হওয়া। পাঁচ. দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়া।

যেভাবে বুঝবেন আপনার ওপর হজ ফরজ হয়েছে

কারো ওপর জাকাত ফরজ না হয়েও তার ওপর হজ ফরজ হতে পারে। কেননা হজ ও জাকাতের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। হজ ও জাকাতের মধ্যে পার্থক্য হলো, জাকাতের সম্পর্ক নির্ধারিত নিসাবের সঙ্গে। হজের সম্পর্ক মক্কায় আসা-যাওয়ার খরচের সঙ্গে। সুতরাং স্থাবর সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রয় করে কেউ যদি হজ আদায় করতে সক্ষম হয় এবং হজ থেকে ফিরে এসে বাকি সম্পত্তি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫২; আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৬)

একইভাবে ব্যবসায়ীর দোকানে যে পরিমাণ পণ্য আছে, তার কিছু অংশ বিক্রয় করলে যদি হজ করা সম্ভব হয় এবং ফিরে এসে যদি বাকি পণ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা যায়, তাহলে তার ওপরও হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫৩)

তবে নারীদের জন্য হজের সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষ সঙ্গে থাকা শর্ত। (ফাতাওয়া শামি : ২/৪৫৫)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *