ভারতের এবারের লক্ষ্য ‘চন্দ্রযান-৪’

ভারতের এবারের লক্ষ্য ‘চন্দ্রযান-৪’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্লাইড

আগস্ট ২৫, ২০২৩ ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান-৩ সফল অবতরণের মাধ্যমে মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারত ইতিহাস গড়েছে। চন্দ্রাভিযানকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) নতুন লক্ষ্য স্থির করেছে। তবে এ পর্যায়ে ভারত আর একা নয়। জাপানের সঙ্গে ভারত যৌথভাবে ‘চন্দ্রযান-৪’ অভিযান চালাবে। এ অভিযানের নাম লুপেক্স (লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন) দেওয়া হয়েছে।

বুধবার ইসরোর হাত ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারত পা রেখেছে। চন্দ্রাভিযান এগিয়ে নিতে ইসরো জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জাক্সা)’ সঙ্গে চুক্তি করেছে। লুপেক্স ভারত ও জাপানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

লুপেক্স বা ‘চন্দ্রযান-৪’ চাঁদের মেরুকেন্দ্রিক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করবে। চাঁদে আদৌ জল আছে কিনা তা খুঁজবে। ২০২৬ সালের ?মধ্যে এ অভিযানের কাজ সম্পন্ন হতে পারে। গত কয়েক বছরে চাঁদের চারপাশে কৃত্রিম উপগ্রহ, টেলিস্কোপ এবং নানাবিধ ক্যামেরার সৌজন্যে জলের অস্তিত্ব সম্পর্কে ইতিবাচক ইঙ্গিত মিলেছে। লুপেক্স সেই বহুচর্চিত জল্পনার অবসান করবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। তবে এই অভিযান সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

চাঁদে আগামী দিনে মানুষের বাসযোগ্য মহল্লা বানানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের অন্য গ্রহ যেমন মঙ্গল, শুক্র, বৃহস্পতিতে পৌঁছনোর চেষ্টাও চলছে অনেক দিন ধরে। ব্যাপারটা হবে অনেকটা কলকাতা থেকে দুবাই যাওয়ার পথে দিল্লি কিংবা মুম্বাই বিমানবন্দরে কিছুক্ষণের বিশ্রামের মতো। পরবর্তী উড়ানের জন্য অপেক্ষার সময়টুকু কাটিয়ে নেওয়া।

আবার লম্বা সফরের ক্লান্তি থেকেও কিছুক্ষণের স্বস্তি। দূরের মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার জন্য চাঁদকে তেমনই একটি ‘হল্ট স্টেশন’ বা বিশ্রামক্ষেত্র বানানোর চেষ্টায় রয়েছেন দুনিয়ার বিজ্ঞানীরা।

বুধবার ইসরো জানায়, চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি স্পর্শ করায় ভারত এ লক্ষ্যপূরণে এক ধাপ এগোল। মহাকাশ গবেষণার জন্য চাঁদকে মহাকাশচারীদের ‘বিশ্রামক্ষেত্র’ বানানোর কাজে প্রথম ধাপ পেরোল ভারতের চন্দ্রযান-৩। বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে ইসরোর প্রধান এস সোমানাথ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, কেন চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণের জন্য তারা দক্ষিণ মেরুকেই বেছে নিল।

তিনি বলেন, আমরা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর থেকে ৭০ ডিগ্রি দূরে অবতরণ করেছি। মানছি, দক্ষিণ মেরুতে আলো-আঁধারি পরিবেশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখানে নামার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো-চাঁদের এ এলাকায় মহাকাশ গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। জলের খোঁজ তো বটেই, তার সঙ্গে চাঁদের এ এলাকায় ভূকম্পনের মাত্রা, মাটিতে থাকা রাসায়নিক, এমনকি খনিজ পদার্থের সন্ধানও চালাবে ইসরো।

সোমানাথ বলেন, যেসব বিজ্ঞানী চাঁদ নিয়ে গবেষণা করছেন, তারা চাঁদের এ এলাকা নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। এর কারণ, শেষ পর্যন্ত মানুষ চাঁদে যেতে চায়। সেখানে থাকার মহল্লাও বানাতে চায়। যাতে সেখান থেকে তারা দূরের মহাকাশে পাড়ি জমাতে পারে। তাই আমরা বলতে পারি, আমরা সেই কাজের জন্য সেরা এলাকাটি খুঁজে বের করার চেষ্টায় রয়েছি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে তেমন জায়গা খুঁজে পাওয়ার অপার সম্ভাবনা আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *