ভারী বৃষ্টিতে গত মঙ্গলবার সকালে কাদাপাথরের ধস নেমে ধ্বংসপুরীতে পরিণত হয়েছে ভারতের কেরলার ওয়েনাড়। উদ্ধারকাজ যত এগোচ্ছে, ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত ধসের নিচে চাপা পড়ে অন্তত ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে ওয়েনাড়ের বিপর্যয়ের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, কেরলের ঐ শহরের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। চারদিকে শুধু ধ্বংস এবং হাহাকারের ছবি। স্বজন হারানোর কান্না নিয়েই খোঁজ চলছে কাছের মানুষ।
ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, কীভাবে গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গেছে। পানির ঢল যাচ্ছে সেই গ্রামগুলোর ওপর দিয়ে। ছবিতে ধরা পড়েছে, কীভাবে শিশুকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছেন এক মা।
ভারী বৃষ্টি এবং ধসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওয়েনাড় জেলার মেপ্পাডি, মুন্ডাকাই এবং চুরাল মালা এবং নুলপুঝা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়েনাড়ের বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো আটকে আছেন শতাধিক মানুষ। তাদের উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। হাত লাগিয়েছেন স্থানীয়রাও। তবে প্রবল বৃষ্টির জন্য বারবার উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধারকাজে গতি আনতে ডেকে পাঠানো হয়েছে সেনাবাহিনীকে।
বিগত কয়েক দিন ধরেই ভারী বর্ষণে জেরবার ওয়েনাড়। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর ৩টা নাগাদ ওয়েনাড় জেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রথম ধস নামে।
ঘণ্টাখানেক পরে আরো একটি জায়গায় ধস নামার খবর আসে। ভোরেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে উদ্ধারকাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
মঙ্গলবার সকালে কেরলের রাজস্বমন্ত্রী রাজন জানিয়েছিলেন, আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে বেলা গড়ানোর সঙ্গে বাড়তে থাকে নিহতের সংখ্যা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, ধসের কারণে মৃত্যু হয়েছে এক বছরের এক শিশুরও। আহত ১৬ জনের চিকিৎসা চলছে মেপ্পাডি এলাকার একটি হাসপাতালে। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘উদ্ধারকাজে গতি আনতে সব রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে।’ কেরলের মন্ত্রী বীণা জর্জ জানান, উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে ভারতের নৌ সেনা। ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর সঙ্গে বাকি ভূখণ্ডের সংযোগরক্ষাকারী একমাত্র সেতুটি ভেসে গিয়েছে।