লাল বলের ক্রিকেটে হারের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যে আগামীকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস।
টেস্ট ক্রিকেটে খারাপ সময়ের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর আটটি ম্যাচে হার ও ১টিতে ড্র করেছে টাইগাররা। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের পর ঘরের মাঠে আর কোন টেস্টও জিততে পারেনি লাল-সবুজরা।
এদিকে সফরে টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম জয়ের রেকর্ড গড়ে আয়ারল্যান্ড। একমাত্র টেস্টটি একতরফা হবার সম্ভাবনাই বেশি। ২০১৭ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর আয়ারল্যান্ড এখন পর্যন্ত মাত্র ৩টি টেস্ট খেলে সবগুলোতেই হেরেছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে টেস্ট ম্যাচ খেলে আইরিশরা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে দারুণ পারফরমেন্স করেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হারে আয়ারল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করা স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৮৫ রানে গুটিয়ে দেয় আইরিশ বোলাররা। এরপর প্রথম ইনিংসে ২০৭ রান করে লিড নেয় আয়ারল্যান্ড।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৩ রান করে আয়ারল্যান্ডকে জয়ের জন্য ১৮২ রানের টার্গেট দিয়েছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৮ রানে গুটিয়ে যায় আইরিশরা। ভালো অবস্থায় থাকার পরও ১৪৩ রানে ম্যাচে হার টেস্ট ফরম্যাটে আয়ারল্যান্ডের অভিজ্ঞতার অভাব বেশ ভালোভাবে ফুটে উঠে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ৫ উইকেটে এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ৭ উইকেটে হার মানে আয়ারল্যান্ড।
২০১৯ সালে নিজেদের সর্বশেষ টেস্ট দল থেকে মাত্র চারজনকে এবার স্কোয়াডে রেখেছে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের দলে নয়জন নতুন মুখ রয়েছে। এর মধ্যে তিনজন কখনো প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেননি। আয়ারল্যান্ডের বিপরীত বাংলাদেশ দলে থাকাদের মধ্যে ৪৭৩টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অভিজ্ঞতার দিক থেকে দুই দলের মধ্যে পার্থক্যের ব্যবধান স্পষ্ট। সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে এবং টি-২০ সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে আইরিশরা।
তৃতীয় ও শেষ টি-২০তে দলের জয়ে বড় অবদান রাখা পল স্টার্লিং টেস্ট দলে না থাকায় আয়ারল্যান্ডে ফিরে গেছেন। দলের নেতৃত্বে ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবির্নি। এছাড়া পিটার মুরকে পাচ্ছে দলটি। আইরিশ নাগরিকত্ব পেতে জিম্বাবুয়ে ছেছেড়েন মুর।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন মুর। সেখানে দল হিসেবে মাত্র ৩টি ম্যাচ খেলেছে আয়ারল্যান্ড। ২০১৮ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলা মুরের অন্তর্ভূক্তি আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনকে শক্তিশালী করে তুলবে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং সহ-অধিনায়ক লিটন দাসকে নিয়েই পূর্ণ শক্তির দল সাজিয়েছে বাংলাদেশ। আইপিএলে খেলতে এনওসি বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব-লিটনের খেলা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ছিলো। তবে দুজনকেই পাচ্ছে টাইগাররা।
টেস্ট ফরম্যাটে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পারফরমেন্স হতাশাজনক। ১৩৬ টেস্টে জয় মাত্র ১৬টিতে, হার ১০২টিতে এবং ১৮টিতে ড্র করেছে টাইগাররা। বৃষ্টির সহায়তায় বেশিরভাগ ম্যাচই ড্র করতে পারে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন চৌধুরী, শরিফুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়।
আয়ারল্যান্ড দল: অ্যান্ড্রু বালবির্নি (অধিনায়ক), পিটার মুর (উইকেটরক্ষক), লরকান টাকার (উইকেটরক্ষক), জর্জ ডকরেল, মার্ক আদাইর, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, ব্যারি ম্যাকার্থি, কার্টিস ক্যাম্ফার, হ্যারি টেক্টর, মারে কমিন্স, ফিওন হ্যান্ড, গ্রাহাম হিউম, ম্যাথিউ হামফ্রেস ও বেন হোয়াইট।