নির্বাচন ছাড়া হুমকি ধমকি দিয়ে সরকার পতন করা যাবে না: কৃষিমন্ত্রী

রাজনীতি

আগস্ট ২০, ২০২২ ৫:৪০ অপরাহ্ণ

শাহরিয়ার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লকের মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণায়ের মাননীয় মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে; বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না; তারাই এখন বর্তমান নির্বাচিত সরকারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে বর্তমান সরকার পতনের দুঃস্বপ্ন দেখছে।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন সম্ভব। নির্বাচন ছাড়া কোন ধরণের হুমকি-ধমকি দিয়ে বর্তমান নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের পতন করা যাবে না। ২০২৩ সালে এ দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে। জনগণ আমাদের ক্ষমতার উৎস। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আগামী দিনের সরকার গঠন করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল বিএনপি এ দেশের যে ক্ষতি করেছে, যে সর্বনাশ করেছে, যেভাবে তারা নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়েছে, সেই কবর থেকে বিএনপি আর কোনো দিন বের হতে পারবে না। দেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে তারা যদি নিজেদের সম্পৃক্ত করতে না পারে, মানুষের কাছে যদি ক্ষমা না চায়, যারা শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, দুর্নীতি করেছে, দেশকে ধ্বংস করেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে, তারা এদেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করবে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহযোগিতা করা।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সকল আন্দোলনের মহানায়ক এবং অবিসংবাদিত নেতা। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ রাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। যা পরদিন ২৭ মার্চ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। অথচ বিএনপি দাবি করছে তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। এটি ইতিহাসের চরম মিথ্যাচার। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। এটি আজ সর্বজনীন সত্য ও স্বীকৃত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলালের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম. ইকবাল আর্সলান। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মোঃ হারিসুল হক, হল প্রোভোস্ট অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের বিএসএমএমইউ শাখার সদস্য সচিব সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ প্রমুখ।

সভাপতির বক্তেব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত কুশীলবরা বেঁচে না থাকলেও, তাদের মরণোত্তর বিচার করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে সকল ভেদাভেদ ভুলে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।

অন্য বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি এখনো সক্রিয়। তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধীরা আর যাতে কোন দিন বাংলার মাটিতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেলক্ষ্যে জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করে যেতে হবে। বাংলার মাটি থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। বক্তারা, দেশের যেকোন সংকটে চিকিৎসক সমাজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালনকারী বর্তমান সরকারের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক, বিভিন্ন অফিস প্রধানগণ, চিকৎসক, ছাত্রছাত্রী, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মরণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *