নকলায় নারায়নখোলা নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করলেন ডিসি সাহেলা আক্তার

দেশজুড়ে

আগস্ট ১৩, ২০২২ ৪:১৯ অপরাহ্ণ

দেলোয়ার হোসেন, নকলা (শেরপুর)

নকলা নারায়নখোলার পাশে ব্রহ্মপুত্র নদী। নদীটির ভাঙনে ভিটেমাটি, ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি মানুষের কবর সবকিছু তলিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন শেরপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ডিসি সাহেলা আক্তার এসব স্থাপনা ও এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ তালুকদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ, চরঅষ্টধর ইউপির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজিলাতুননেছা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জামালপুর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, নকলা থানার তদন্ত কর্মকর্তা ইসকান্দার হাবিব, নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর হোসেন, প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান সৌরভ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-আমিন, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবু হামযা কনক, সাংবাদিক শফিউল আলম লাভলু, নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকবৃন্দ, বিদ্যালয় পরিচালা পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ কালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার জানান, ভাঙ্গনরোধে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। খুবদ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।

সরেজমিনে পরিদর্শন কালে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের নকলা উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকা অব্যাহত ভাঙ্গনে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে নকলা উপজেলার সমতলের চিত্র।

গত কয়েক বছরে নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গন ও এর একটি পাকা ভবনসহ মসজিদ, মকতব, কবরস্থান, রাস্তা, কৃষি জমি, গাছ-পালা ও অনেক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়েছে অনেক পরিবার। বাড়ি ছাড়া হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে ভাসমান হিসেবে বসবাস করছেন এ এলাকার অগণিত মানুষ।

গত দুইবছরের ব্যবধানে নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন ও শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ নদীগর্ভে চলে গেছে। এরই মধ্যে বিদ্যালয়টি তিনবার স্থানান্তর করতে হয়েছে। এবছর আবার ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে বিদ্যালয়টির অবশিষ্ট একটি পাকা ভবন ও একটি টিন সেট ঘর। চড়ম হুমকিতে আছে অগণিত বসত বাড়ি, কৃষি জমি ও কবরস্থান।

ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ভাঙনে ভুক্তভোগী দেলু মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, তার বাবার শেষ স্মৃতি কবরটাও নদী গর্ভে চলে যাওয়ার পথে। যেকোন সময় বাবার কবরটি নদের গর্ভে চলে যাবে বলে তিনি আশংঙ্কা করছেন। এই মুহুর্তে ভাঙ্গন রোধ করতে না পারলে আগামীবছর হয়তো আর তার বাবার কবরটাও দেখতে পারবো না বলে তিনি মনে করছেন।

এমনসব খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ এলাকাবাসী যৌথভাবে ভাঙ্গরোধে নিরলস কাজ করছে।

উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকাবাসী নদীর ভাঙ্গন থেকে বাঁচতে মানববন্ধন করেছেন। তাদের বিশ্বাস সরকার খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করবে।

এ দিন বিকেলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাহেলা আক্তার ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙ্গন কবলিত নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেওয়া প্রধান মন্ত্রীর উপহারের ঘর পরিদর্শন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *