দম্পতিদের মধ্যে যেসব বিষয়ে তর্কবিতর্ক সম্পর্ক মজবুত করে

দম্পতিদের মধ্যে যেসব বিষয়ে তর্কবিতর্ক সম্পর্ক মজবুত করে

লাইফস্টাইল স্পেশাল

মে ২১, ২০২৪ ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া, পারিবারিক জটিলতা খুবই খারাপ একটা সমস্যা। দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া হয়নি এমনটি খুবই কম। ছোট একটি ঘটনা বা বিষয় নিয়েই দেখা যায় তুমুল ঝগড়া। যার সমাধান হয়ে যায় কঠিন।

তবে কিছু বিষয়ে ছোটখাটো ঝগড়া বা তর্কবিতর্ক হওয়া ভালো। সেসবের ফলে, সম্পর্কের ভীত আরো মজবুত হয়। তেমন ৭টি বিষয় নিয়ে এই আলোচনা-

একে অপরের সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন

সঙ্গীর সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারাটা সম্পর্কের মূল ভিত্তি। বিভিন্ন প্রজন্মের দম্পতিরাও একে অপরের সঙ্গে ভালো যোগাযোগের সুফল ভোগ করেছেন। অপরদিকে কথা না বললে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুজনের ‘ইগো’ বা অহংবোধ এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব।

কর্পোরেট চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্স চাকরিও করেন জোহাইনা। তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার স্বামী প্রতিদিন লম্বা সময় ধরে কাজ করি। আমরা যত ব্যস্ত বা ক্লান্তই থাকি না কেন, দিনশেষে আমরা একে অন্যের সঙ্গে কথা বলি। আমি বাড়ি পৌঁছেছি, অন্তত এটুকু হলেও তাকে জানাই।’

‘আমরা যত স্বাবলম্বীই হই না কেন, দিনশেষে আমাদের সবারই মন খুলে বলার জন্য কাউকে না কাউকে প্রয়োজন হয়। বেশিরভাগ দম্পতিই দিনশেষে তাদের সঙ্গীকে মন খুলে কিছু বলতে পারার মাঝে আনন্দ খুঁজে পান এবং স্বাভাবিকভাবেই তখন তা একসঙ্গে কাটানো সময় হয়ে উঠে।’ – তিনি বলেন।

হিংসা ও সন্দেহ

দাম্পত্য জীবনে অশান্তির অন্যতম কারণ পরস্পরের প্রতি সন্দেহ পোষণ করা। নিছক সন্দেহের কারণেও বহু মানুষের সংসার ভেঙে যায়, পারস্পরিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ইসলাম নারী ও পুরুষ উভয়ে ভিত্তিহীন সন্দেহ, অন্যের কথায় প্রভাবিত হওয়া, সন্দেহের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে নিষেধ করে। বিপরীতে ইসলাম জীবনসঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করার এবং প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত সুধারণা পোষণ করার নির্দেশ দেয়।

একতরফা কোনো সিদ্ধান্ত নয়

সম্পর্কটা দুজনের, কাজেই যা সিদ্ধান্ত নেবেন দুজনে একসঙ্গে মিলে নিন। কেউ একজন চাইলেই হুট করে বাজে কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আগে তার যাবতীয় কারণ আলোচনা করুন। সমাধানের চেষ্টা করুন। দুজনেও না পারলে কাছের কোনো বন্ধু কে এক্ষেত্রে বলুন সাহায্য করতে। তবে সবার আগে আপনাদের নিজেদেরকে ঠিক হতে হবে। তবেই সবটা আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

অর্থনৈতিক বিষয়–আশয়

দম্পতিদের মধ্যে টাকাপয়সা নিয়ে তর্কবিতর্ক হতেই পারে। একজন হয়তো ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করাকে গুরুত্ব দেন। আরেকজন বর্তমানের জন্যই স্বতঃস্ফূর্তভাবে খরচ করতে পছন্দ করেন। দুজনের বেড়ে ওঠার পরিবেশ-পরিস্থিতি, পারিবারিক আবহ, অতীত অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এই ব্যাপারে যত নিঃসংকোচে আলোচনা করা যায়, ততোই ভালো।

লক্ষ্য অর্জনে দুজনে একসঙ্গে কাজ করুন

জীবনের প্রতিটি ধাপেই নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনে মানুষ বিভিন্ন কিছু করে। কেউ সাঁতার শেখে, কেউবা ড্রাইভিং শেখে, কেউ আবার কোনো ডিগ্রি নেয়। সম্ভব হলে দুজন মিলেই এ কাজগুলো করুন। এতে ডিগ্রি বা দক্ষতা অর্জনও হবে, আবার সঙ্গীর সঙ্গে সময়ও কাটানো যাবে।

একে অপরকে স্পেস দিন

গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার হচ্ছে সঙ্গীকে স্পেস দেওয়া। আমরা প্রত্যেকেই আসলে আমাদের নিজেদের জীবনই যাপন করছি। কাজের চাপ বা অন্য ব্যস্ততায় যখন অন্য কোনোদিকে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না, তখনও এই স্পেস খুব কাজে আসে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে সবসময় সঙ্গীর উপস্থিতি বা সঙ্গ প্রত্যাশা করাটা মোটেও আদর্শ হতে পারে না।’

মনের ভাব প্রকাশ না করা

দাম্পত্যে কখনো কখনো কারও মনে হতে পারে যে, সঙ্গী সম্পর্ককে আগের মতো অগ্রাধিকার দিচ্ছেন না। এই পরিস্থিতি বিভিন্ন কারণে আসতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, একজন সঙ্গীর এ রকম মনে হলেও ঝামেলা এড়াতে তারা অন্যজনকে কিছুই বলেন না। উৎকণ্ঠার কথা এভাবে চেপে রাখা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *