গাজায় আব্বাস শাসনের ওকালতি করছেন বাইডেন

গাজায় আব্বাস শাসনের ওকালতি করছেন বাইডেন

আন্তর্জাতিক

নভেম্বর ২০, ২০২৩ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

গাজায় আব্বাস শাসনের ওকালতি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ ইস্যুতে শনিবার ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা নিবন্ধের সমালোচনায় এমন মন্তব্যই করছে মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যমগুলো। নিবন্ধে বাইডেন বলেছেন, ‘গাজা এবং পশ্চিম তীর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) অধীনে থাকা উচিত। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের এ দলটি (পিএ) এতদিন শুধু পশ্চিম তীরে শাসন করত। বাইডেনের এ ‘পরিকল্পনা’ প্রকাশের পর সবার ধারণা, এবার গাজাও প্রেসিডেন্ট আব্বাসের হাতে তুলে দেবে যুক্তরাষ্ট্র।’

ফিলিস্তিনের পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও শক্ত অবস্থান প্রকাশ করেছেন বাইডেন। বলেছেন, ‘পুতিন (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) এবং হামাসের চ্যালেঞ্জ থেকে পিছপা হবে না যুক্তরাষ্ট্র।’ রুশ প্রেসিডেন্টকে হামাসের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘পুতিন এবং হামাস উভয়েই প্রতিবেশী গণতন্ত্রকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার জন্য লড়াই করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা হতে দিতে পারে না।’ তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র অপরিহার্য ভূমিকা পালনের মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের জন্য তাদের মিত্রদের সমর্থন করে।

বাইডেন আরও বলেছেন, সংঘাত সমাধানের জন্য বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা এর নেতৃত্ব দেব। আমরা ইতিহাস দেখেছি, কীভাবে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের লক্ষ্য শুধু সীমিত সময়ের জন্য যুদ্ধ বন্ধ করা নয়। চিরতরে এর সমাপ্তি ঘটানো। আমরা সাহসী ইউক্রেনীয়দের তাদের স্বাধীনতা ও স্বদেশ রক্ষায় সমর্থন করছি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিজয় অভিযান বন্ধ করতে আমরা তাদের অস্ত্র ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্র একা এটা করছে না। ইউক্রেনের আত্মরক্ষার জন্য যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে ৫০টিরও বেশি দেশ আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। একইভাবে আমরা ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছি। কারণ তারা হামাসের থেকে নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। গাজার পরিস্থিতি এবং শিশুসহ হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিনি পিতা-মাতারা তাদের হাত অথবা পায়ে তাদের সন্তানের নাম লিখছেন। যাতে তাদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটলে সহজে শনাক্ত করা যায়।’

অবিরাম সহিংসতার চক্র ভেঙে দিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত বাইডেন। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চান না। বাইডেন বিশ্বাস করেন, ইসরাইলি এবং ফিলিস্তিনির মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হলো দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান (যার মাধ্যমে স্বাধীনতা, সুযোগ ও মর্যাদার সঙ্গে দুটি রাষ্ট্র পাশাপাশি বসবাস করতে পারে)। সেই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র মৌলিক নীতিগুলোর প্রস্তাব করেছে। ইসরাইলি নেতাদের পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চরমপন্থি সহিংসতা বন্ধ করতে জোর দিয়েছেন বাইডেন। বলেছেন, ‘যারা সহিংসতা করছে তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’ পশ্চিম তীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলাকারী চরমপন্থি ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করাসহ যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেছেন, গাজার দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা টেকসইভাবে মেটাতে একটি পুনর্গঠন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে এই সংঘাত যাতে আরও ছড়িয়ে না যায় এবং আরও বাড়তে না পারে তার জন্য আমরা কাজ চালিয়ে যাব। তিনি সংঘাত প্রতিরোধে দুটি মার্কিন ক্যারিয়ার গ্র“পকে প্রতিরক্ষা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার, নিরীহ মানুষের প্রাণহানি কমিয়ে আনার এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। বাইডেন বলেছেন, ‘যদি আমরা এই পদক্ষেপগুলোতে একমত হতে পারি এবং সেগুলোকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তাহলে আমরা একটি ভিন্ন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *