ক্রিমিয়ার সেতু বিস্ফোরণে দায়ী কে বা কী?

ক্রিমিয়ার সেতু বিস্ফোরণে দায়ী কে বা কী?

আন্তর্জাতিক

অক্টোবর ১০, ২০২২ ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার একমাত্র সংযোগ সেতুতে শনিবার সকালের দিকে জ্বালানিবাহী লরি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ওপরে থাকা রেলসেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর মূল সেতুর একটি অংশ পানিতে পড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।

ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূলভূখণ্ডকে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়ান সেতুতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণের পরপরই রাশিয়া ইঙ্গিত দিয়েছেন একটি ট্রাক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে কারা এই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী তা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি।

কার্চ ব্রিজ নামের এই সেতুতে বিস্ফোরণের কারণ হিসেবে বেশ কিছু তত্ত্ব তুলে ধরা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই বিস্ফোরণে দায়ী কে বা কী তা অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন সংস্থাটির ইউক্রেন প্রতিনিধি পল অ্যাডামস।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইউক্রেনের উচ্ছ্বাস দেখিয়ে দিচ্ছে তাদের সন্ত্রাসী চরিত্র। তবে বিস্ফোরণের জন্য কিয়েভকে সরাসরি তিনি দায়ী করেননি।

সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত সিকিউরিটি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, রুশ শহর ক্রাসনোডার থেকে আসা হিসেবে সন্দেহ করা একটি ট্রাক বিস্ফোরণের সময় একটি সেতুতে পশ্চিম দিকে যাচ্ছিল।

কিন্তু নিবিড়ভাবে ফুটেজটি পরীক্ষার পর মনে হচ্ছে বিস্ফোরণের সঙ্গে ট্রাকটির কোনো সম্পর্ক নেই। ফুটেজে দেখা গেছে, বড় আকারের আগুনের গোলা উঠছে আকাশের দিকে। অপরদিকে ট্রাকটি সেতুর উঁচু অংশের দিকে উঠছিল।

ট্রাক বোমা তত্ত্ব দ্রুত রুশ মহলে ছড়িয়ে পড়লে সন্দেহ বাড়তে শুরু করে। রুশরা এটিকে ইউক্রেনের পক্ষে সাহসী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করেছেন।

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর এক সাবেক বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, যানবাহনভিত্তিক অনেক বড় আইইডি দেখেছি। কিন্তু এটিকে (ট্রাক) তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। এই বিস্ফোরণের সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে সেতুর নিচ থেকে কোনো একটি নৌপথের ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

কয়েকজন বিশ্লেষক উল্লেখ করছেন, সিকিউরিটি ক্যামেরার ভিডিওতে সেতুর একটি পিলারের কাছে ছোট আকারের নৌকার ঢেউয়ের মতো কিছু দেখা গেছে বিস্ফোরণের কয়েক সেকেন্ড আগে।

তবে এই ঘটনাকে নিজেদের একরকম জয় হিসেবেই দেখছে ইউক্রেন। তাদের দাবি, এটা ইউক্রেনে রাশিয়ার আধিপত্যের পতনের পূর্বাভাস। যদিও রাশিয়া এটাকে দুর্ঘটনা হিসেবেই হাজির করছে।

এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে ওই এলাকা দেখাশোনার করার আদেশ দিয়েছেন।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি মেরামতে তাৎক্ষণিকভাবেই কাজ শুরু করা হয়েছে। পানির নীচে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে নামানো হয়েছে ডুবুরি দলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *