কেরানীগঞ্জে বেদে জনগোষ্ঠীর মাঝে অক্ষরজ্ঞান ও সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রদান

দেশজুড়ে

জুন ৫, ২০২৪ ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ

শিহাব আহম্মেদ-কনসক প্রতিনিধি:

কেরানীগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চিরন্তন সমাজকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে অর্ধশতাধিক বেদে জনগোষ্ঠীর মহিলা ও শিশুদের নিয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন। খোঁজ নিয়ে সরেজমিনে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া, বাস্তা ও রোহিতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ৬০টি বেদে পরিবার বাস করে। তাদের মধ্যে অনেকে এক বছর থেকে দশ বছর পর্যন্ত বসবাস করছে এখানে। বংশ পরম্পরায় বেদে পেশা যারা টিকিয়ে রেখেছেন তাদের অনেকেরই নেই শিক্ষাজ্ঞান। তাই এখানকার বেদে সন্তানদের শিক্ষার জ্ঞান দিতে চিরন্তন সমাজকল্যাণ সংস্থার নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৬ মাস ব্যাপী এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

বেদে জনগোষ্ঠীর পাখি আক্তার (৩০) জানান, আমাদের মধ্যে যাদের একটু টাকা-পয়সা আছে তারা ছেলে মেয়েদের পড়ায়। কিন্তু যারা আর্থিক অনটনে থাকে তাদের সন্তানদের কাজে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সংগঠনটি আমাদের সন্তানদের ছয় মাস বিনামূল্যে পড়াবে। এতে কিছুটা হলেও শিশুরা শিখতে পারবে। বেদে জনগোষ্ঠীতে থাকা কিশোরী সুরাইয়া বলেন, কোনোদিন স্কুলে যাইনি, গ্রামের ছেলে মেয়েদের স্কুলে যেতে দেখে আমারও স্কুলে যেতে মন চায়। আমাদের বেদে পল্লীর ছেলে মেয়েদের কেউ স্কুলে যেতে বলে না। ভোর হলেই আমরা বাবা-মায়ের সঙ্গে গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ঘুরে বেড়াই। গ্রামের শিশুদের খেলা দেখাই। লেখাপড়া করে আমরা অন্য পেশায় কাজ করতে চাই।

বেদিনী মনিজা খাতুন বলেন, বেদে শিশুদের পড়াশোনার আগ্রহ থাকলেও এদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কেউ এগিয়ে আসে না। কিন্তু সামাজিক সংগঠন চিরন্তন সমাজকল্যাণ সংস্থার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের জন্য আমাদের সন্তানরা পড়াশোনা করতে পারবে, আমরা অনেক খুশি। চিরন্তন সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি পীযূষ কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির সহ-সভাপতি মো. শাহজামাল, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ কুমার বাড়ৈ ও কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম প্রমুখ।

সংস্থার সভাপতি পীযূষ কান্তি সরকার বলেন, একজন কোমলমতি শিশুর হাতে যখন বই-খাতা থাকার কথা, সেখানে শিশুরা হাতে তুলে দেওয়া হয় সাপের বাক্স। এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বেদে শিশুদের হাত পেতে ভিক্ষা করতে দেখি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগ বেদে জনগোষ্ঠীর শিশুদের অক্ষরজ্ঞান ও মহিলাদের সেলাই প্রশিক্ষণের ছয়মাসে কার্যক্রম শুরু করছি। এ কার্যক্রম মাধ্যমে বেদে জনগোষ্ঠীর শিশু ও মহিলা সামান্য কিছু হলে উপকৃত হবেন বলে আশা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *