একতরফা নির্বাচন দেশকে আরো সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে

একতরফা নির্বাচন দেশকে আরো সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে

জাতীয় স্লাইড

নভেম্বর ২৪, ২০২৩ ৮:২২ পূর্বাহ্ণ

চলমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে দেশকে আরো সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছেন বলে মনে করেন দেশের ৫৮৬ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

তারা অবিলম্বে একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দল নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও সংলাপের মাধ্যমে নতুন তফসিল দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত হচ্ছে মানুষের ভোটের অধিকার, মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ দেশের ৩৬টি রাজনৈতিক দল মানুষের এই ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত না করে আরেকটি ২০১৪ এবং ২০১৮ মার্কা নির্বাচনের আয়োজন করার পায়তারা চালাচ্ছে । এর পরিণতি শুভ কর নয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন মানুষের জীবনে প্রতি পাঁচ বছর পর পর আসে সেটাকে উৎসবমুখর করে তোলার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার বিরোধীদল বিএনপিসহ আন্দোলনকারী দলগুলোর সভা সমাবেশ করার সমস্ত অধিকার ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে কেবলমাত্র তাদের নিজেদের শিবিরের এবং পছন্দের দলগুলোকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করছে। একটি দলের অফিসের সামনে উৎসব মুখর পরিবেশ আর একটি দলের অফিসে ঝুলছে তালা, পুলিশের সতর্ক পাহারার কারণে সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না কোন নেতাকর্মী।

ইতিমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকের বাড়িতে প্রতি রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হানা দিচ্ছে গ্রেফতার করার জন্য। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে গোটা দেশ আজ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এখন নতুন কৌশল হিসেবে জাতীয় সংসদের নির্বাচন করতে পারে বিএনপির এমন সব সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ঢালাও সাজা দেওয়া হচ্ছে আদালতকে ব্যবহার করে।

বিশিষ্ট নাগরিকরা মনে করেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন যে পথে হাঁটছে তাতে জনমনে এই ধারণা স্পষ্ট হচ্ছে যে, দেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে । এর পরিণতি কখনোই দেশের জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন না এই বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ। তারা সরকারকে এই পথ পরিহার করে একটি সুন্দর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং উৎসব মুখর নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য জনআকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন- প্রফেসর ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর ড.মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর ড. আফম ইউসুফ হায়দার, অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক আলমগীর মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, প্রফেসর আহমেদ কামাল, অধ্যাপক নুরুল আমিন, প্রফেসর ড. তাজমেরি এসএ ইসলাম, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, কবি ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, প্রফেসর ডা: সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ডা: ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংবাদিক ড. রেজোয়ান হোসেন সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, প্রফেসর ড.আবদুল লতিফ মাসুম, প্রফেসর ড. খলিলুর রহমান, প্রফেসর ডা. গাজী আবদুল হক, প্রফেসর ড. মোশাররফ হোসেন মিয়া, সাংবাদিক এম এ আজিজ , সাংবাদিক এলাহী নেওয়াজ খান, সাংবাদিক মুন্সী আবদুল মান্নান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, সাংবাদিক এম. আবদুল্লাহ, সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম কাগজী, সাবেক সচিব আবদুল হালিম, সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাবেক সচিব আবদুর রশিদ সরকার, সাবেক সচিব বিজন কান্তি সরকার, সাবেক সচিব মুহম্মদ জকরিয়া, প্রফেসর ডা: আবদুল কুদ্দুস, প্রফেসর ডা. একেএম আজিজুল হক,  প্রফেসর ডা: হারুন আল রশিদ, ডা. আবদুস সালাম, ডা: সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিশ সিমকী, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, কৃষিবিদ প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, প্রফেসর ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, এডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আশরাফ উদ্দিন উজ্জল, কৃষিবিদ গোলাম হাফিজ কেনেডি প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *