আবারো চালু হচ্ছে মোবাইল ফোন নিবন্ধন

আবারো চালু হচ্ছে মোবাইল ফোন নিবন্ধন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪ ১:৫৮ অপরাহ্ণ

তিন বছর পর দেশে আবারো চালু হতে হচ্ছে মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধন (এনইআইআর) ব্যবস্থা। ২০২১ সালের ১ জুলাই প্রথমবারের মতো এ ব্যবস্থা চালু করে সরকার। সে সময় অনেক মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধনও করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এনইআইআর পদ্ধতি চালুর পর দেশে অবৈধ মোবাইল ফোন প্রবেশের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছিল। এতে স্বস্তি ফিরে এসেছিল দেশের মোবাইল ফোনের উৎপাদকদের মাঝে। ফোন সেট নিবন্ধনের আগে গ্রে মার্কেটের (অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করা মোবাইল) পরিধি মোট মোবাইল বাজারের অর্ধেক ছাড়িয়ে গিয়েছিল (৫৩ শতাংশ)। তবে এ পদ্ধতি চালু হলে দেশে তৈরি এবং বৈধ চ্যানেলে আসা মোবাইল ফোন কিনতে বাধ্য হন ক্রেতারা। হঠাৎ প্রায় শূন্য হয়ে যায় গ্রে মার্কেট।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র স্পেক্ট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু হবে।

সম্প্রতি বিটিআরসিতে এক মতবিনিময় সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, স্থানীয় উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও রফতানি বৃদ্ধি, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিবন্ধিত ও বৈধ মোবাইল ফোন ছাড়া কেউ যেন অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহার না করতে পারেন। এজন্য ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকর করতে হবে।

এদিকে টেলিকম খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছুকাল আগেও দেশে মোবাইল ফোন সেট বিক্রির সংখ্যা ছিল বছরে সাড়ে তিন কোটিরও বেশি। বর্তমানে ২ কোটির কিছু বেশি মোবাইল ফোন বিক্রি হয়। দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। ক্ষেত্র বিশেষে তা অর্ধেকে নেমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গ্রে মার্কেট সেই জায়গাটা দখল করেছে। তারা মনে করছেন, এনইআইআর সিস্টেম চালু হলে দেশের মোবাইল শিল্পটা একটা টেকসই রূপ পাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এনইআইআর চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রথমবার চালুর সময় যেসব নিয়ম-কানুন মেনে চলা হয়েছে, যেমন- মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের নিবন্ধনের আগে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া হয়েছে, বিদেশ থেকে ফোন আনার ক্ষেত্রে ব্যাগেজ রুলস অনুসরণ করা হয়েছে এবং বিদেশ থেকে উপহার পাওয়া ফোনের ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম ছিল, সেসব এবারও থাকবে কি না—থাকলে কতটা থাকবে, নতুন আরও কী বিষয় যুক্ত হবে, এখন তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

তবে মোবাইল ফোন সেট বৈধ নাকি অবৈধ, তা যাচাইয়ের জন্য বিটিআরসি গ্রাহকের জন্য একটি পদ্ধতি চালু করা হবে। প্রথমবার এনইআইআর সিস্টেম চালুর জন্য বিটিআরসি সিনেসিস আইটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল।

যেভাবে মোবাইল ফোন নিবন্ধন চেক করবেন:

ব্যবহৃত মোবাইলে যেকোনো সিম চালু করে ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD<স্পেস>মোবাইল ফোন সেটের ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বরটি লিখতে হবে।

এরপর সেটা ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বৈধতা সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে।

মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর জানা না থাকলে ডায়াল অপশনে গিয়ে *#০৬# চাপলে আইএমইআই নম্বর পাওয়া যাবে। পাশাপাশি মোবাইলের বক্সে কিংবা মোবাইলের পেছনে একটি স্টিকারেও এটি লেখা থাকে।

এছাড়া neir.btrc.gov.bd ওয়েব লিংকে গিয়ে বিদ্যমান সিটিজেন পোর্টাল এবং মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারেও এই সেবা পাবেন গ্রাহকরা।

যেভাবে মোবাইল ফোন নিবন্ধন করবেন:

প্রথমে neir.btrc.gov.bd লিংকে ভিজিট করে আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করুন। এরপর পোর্টালের Special Registration সেকশনে গিয়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট এর IMEI নম্বরটি দিন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের ছবি/স্ক্যান কপি(যেমনঃ পাসপোর্টের ভিসা/ইমিগ্রেশন তথ্যাদি, ক্রয় রশিদ ইত্যাদি) আপলোড করুন এবং Submit বাটনটি প্রেস করুন।

হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে। হ্যান্ডসেটটি বৈধ না হলে এসএমএস এর মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে পরীক্ষাকালীন সময়ের জন্য নেটওয়ার্কে সংযুক্ত রাখা হবে। সেই সময় পার হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মোবাইল অপারেটরের নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের সাহায্যেও এই সেবা নেয়া যাবে।

বর্তমানের ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি বিদেশ থেকে শুল্কবিহীন সর্বোচ্চ দুইটি এবং শুল্কপ্রদান করে আরো ছয়টি হ্যান্ডসেট সঙ্গে আনতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *