আইভরি কোস্টে শামুক এখন টাকার খনি

আইভরি কোস্টে শামুক এখন টাকার খনি

আন্তর্জাতিক

ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

বৃহদাকৃতির শামুক। সুস্বাদু খাদ্য হিসাবেই বেশি পরিচিত। তবে শুধু খাবার নয়, ব্যবহৃত হচ্ছে মূল্যবান প্রসাধনী তৈরিতেও। সাবান, জেল, মলম আরও কত কী! এমনকি অন্য প্রাণীদের খাদ্য হিসাবেও কাজে লাগে। চাষ হচ্ছে কৃত্রিমভাবে। অল্প জায়গায় কম পরিশ্রমে বেশি লাভ। আর এ কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ আইভরি কোস্টের অর্থনীতিতে খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। শামুক চাষে ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখছেন স্থানীয় কৃষকরা। মাত্র ২০ লাখ ডলার (২২ কোটি ১২ লাখ টাকা প্রায়) পুঁজিতে আয় হচ্ছে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রতিমাসে সর্বনিæ আয় ৭৫,০০০ ফ্রাঙ্ক। দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব আজগুই শহরের শামুকের খামারগুলো এখন রীতিমতো টাকার খনি। আলজাজিরা, এএফপি।

শামুকগুলো পাতা, ফল, সবজি, ভুট্টা এবং বাজরা খেয়ে বড় হতে থাকে। এমনকি একেকটি শামুকের ওজন সর্বাধিক ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। শামুক ব্যবসায় ব্যাপক লাভবান হয়েছেন এমনই এক প্রতিষ্ঠান ‘আইভরি কোস্ট স্লেইল এক্সপার্টাইজ (সিআইইই)। শামুক উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দেশটির সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ছয় বছর আগে। উত্তরোত্তর সাফল্যে বর্তমানে কোম্পানিটির ৫০টি খামার এবং প্রক্রিয়াজাতকেন্দ্র রয়েছে। প্রতিমাসে এ কোম্পানিটি ৭৫ জন কর্মী নিয়োগ করে এবং ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়। পরবর্তীতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা নিজ উদ্যোগে নিজেদের খামার ব্যবসা শুরু করেন।

প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বর্তমানের ২৫,০০০ খামারকে আগামী বছরগুলোতে ১ লাখে উন্নীত করা। এমনকি প্রাকৃতিকভাবে বড় হওয়ায় শামুকগুলোর স্বাদও একই থাকে। সিআইইইয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক বার্নাস ব্লু জোর দিয়ে বলেন, বন্য বিচরণকারী এবং চাষ করা শামুকের মধ্যে স্বাদের কোনো পার্থক্য নেই। শামুকের মাংস আইভরিয়ানদের পাশাপাশি প্রতিবেশী গিনি উপসাগরীয় দেশগুলোতে খুব জনপ্রিয়। এটি সাধারণত মসলাদার সস দিয়ে খাওয়া হয়। নামিদামি রেস্তোরাঁগুলোতে এটি ‘ম্যাকুইস’ নামে পরিচিত। সাশ্রয়ী মূল্যের হওয়ায় প্রায়ই সবার সামর্থ্যরে মধ্যে থাকে।

ফলে শামুকের তৈরি বিশেষ খাবারটির জনপ্রিয়তাও বেশি। নারীরা শামুকের ‘স্লাইম’ (আঠালো জাতীয় পদার্থ) থেকে সাবান এবং শাওয়ার জেল, নারকেল তেল তৈরি করে। এসব পণ্য এতটাই জনপ্রিয় যে, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫,০০০ সাবান এবং ৫,০০০ বোতল জেল তৈরি করা হয়। প্রসাধনী সামগ্রীগুলো ত্বককে পুষ্টি জোগাতে এবং বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।

দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ বন ধ্বংস হয়ে গেছে। কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহারে বন্য শামুকের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃত্রিম পদ্ধতির এই শামুক চাষে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি প্রাণীটির বিলুপ্তিও ঠেকাচ্ছেন খামার ব্যবসায়ীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *