বিশ্বের সবচেয়ে ‘ধারালো’ ও ‘অবিনাশী’ তলোয়ার হিসেবেই দাবি করা হতো এটি। ১৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাটির ১০০ ফুট ওপরে পাথরের দেওয়ালে গাঁথা এই তলোয়ারের জাদুকরী ক্ষমতা নিয়ে বলা হয়েছে ফরাসি সাহিত্যের প্রাচীনতম একটি কবিতায়ও। তাই এটি অনেকের কাছে এটি ‘জাদুর’ তলোয়ার হিসেবেও পরিচিত।
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে রোকামাডোর শহরে পাথরের প্রাচীরে এতদিন তলোয়ারটি সংরক্ষিত ছিল। হুট করেই সেখান থেকে ঐতিহাসিক প্রাচীন তলোয়ারটি হঠাৎ ‘উধাও’ হয়ে গেছে। যদিও এখনো জানা যায়নি তলোয়ারটি কীভাবে উধাও হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
স্থানীয়দের ধারণা, মাটির ১০০ ফুট ওপরের পাথরের প্রাচীর থেকে চোর তলোয়ারটি টেনে বের করে নিয়ে গেছে। মাটির এত উপরে থাকা তলোয়ারটি কীভাবে বের করা হলো তা খুঁজে বের করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ডুরান্ডাল’ তলোয়ারটি ‘ফরাসি এক্সক্যালিবার’ নামে পরিচিত; যা ব্রিটেনের ‘সত্যিকারের রাজা’ আর্থার পাথর থেকে টেনে বের করেছিলেন। প্রচলিত আছে, একজন দেবদূত অষ্টম শতাব্দীতে ‘হলি’ রোমান সম্রাট শার্লেমেনকে তলোয়ারটি দিয়েছিলেন।
১১ শতাব্দীর একটি কবিতায় এই তলোয়ারের ‘জাদুর ক্ষমতা’ নিয়ে বলা হয়। এটি ফরাসি সাহিত্যের প্রাচীনতম একটি কবিতা। ‘দ্য গান অব রোল্যান্ড’- শীর্ষক কবিতার একমাত্র কপিটি এখন অক্সফোর্ডের বোদলিয়ান লাইব্রেরিতে রাখা আছে।
বলা হয়ে থাকে, সম্রাট শার্লেমেন তার সেরা সৈনিক রোল্যান্ডকে ‘জাদুর’ তলোয়ারটি উপহার দিয়েছিলেন। যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা যাওয়ার আগে রোল্যান্ড তলোয়ারটি ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন যাতে তার শত্রুরা আর এটি ব্যবহার করতে না পারে। তবে তিনি তা ভাঙতে পারেননি।
পরে হতাশায় তিনি তলোয়ারটিকে ছুড়ে ফেলেন আর এটি কয়েকশ’ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ফরাসি শহর রোকামাডোরের একটি পাহাড়ে আটকায়। এদিকে, তলোয়ারটির হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার স্থানীয়রা বেশ উদ্বিগ্ন। কারণ অনেকেই বিশ্বাস করেন, তাদের ভাগ্য ওই অস্ত্রের সঙ্গে জড়িত।
রোকামাডোর শহরের কাছে একটি মূল্যবান নিদর্শন হিসেবে দেখা হতো ডুরান্ডাল তলোয়ারটি। শহরের মেয়র ডমিনিক লেনফ্যান্ট একটি ফরাসি সংবাদপত্রকে বলেন, আমরা ডুরান্ডালকে মিস করব। কয়েক শতাব্দী ধরে এটি রোকামাডোরের অংশ ছিল।