এপ্রিল ২৮, ২০২২ ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
রাজনৈতিক অস্থিরতা আর অর্থনৈতিক দুরবস্থায় শোচনীয় পাকিস্তানের পরিস্থিতি। সংকট কাটাতে ফের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তানের নতুন সরকার। তবে ইমরান খান সমর্থকদের রাজপথে থাকার ঘোষণায় দেশটির সংকট পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শ্রীলঙ্কার পথে।
শ্রীলঙ্কার মতো পাকিস্তানেও অর্থনীতির বড় সংকট মূল্যস্ফীতি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ শতাংশ। এ অঞ্চলে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির দিক থেকে শ্রীলঙ্কার পরই আছে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি ২১ শতাংশ। কয়েক মাসের মধ্যেই পাকিস্তানে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা অর্থনীতিবিদদের।
তারা বলছেন, বিদেশ থেকে পাকিস্তানে ডলার প্রবেশের চেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। ফলে ধস নেমেছে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির বিনিময় হারে। পাকিস্তানে এখন ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ১৮৯ রুপি। চলতি অর্থ বছরেই রুপির অবমূল্যায়ন হয়েছে ২০ শতাংশ। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
দ্রুতগতিতে কমছে পাকিস্তানের রিজার্ভও। মাত্র এক মাসেই দেশটির রিজার্ভ কমেছে পাঁচ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তাদের রিজার্ভ ১১ বিলিয়ন ডলারেরও কম। দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্যও যথেষ্ট নয় এই রিজার্ভ।
এডিবির মতে, চলতি অর্থবছরে পাকিস্তানের চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে দাঁড়াতে পারে জিডিপির সাড়ে ৩ শতাংশে। চলতি হিসাবের ঘাটতি বাড়তে থাকায় দেশটির ব্যাংকগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করা এখন বেশ কঠিন।
গত অর্থবছরে পাকিস্তানের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। ইমরান খানের অঙ্গীকার ছিল তা ৬ শতাংশে উন্নীত করার। তবে এডিবির হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানে এবার জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে থাকবে। কারণ চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশটির বৃহৎ শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ।
কোনো দেশের জিডিপি আর ঋণের অনুপাত যদি ৪০ শতাংশ বা এর চেয়ে বেশি হয় তখন অর্থনীতির বিবেচনায় ধরে নেওয়া হয়, দেশটি দেউলিয়া হওয়ার পথে এগোচ্ছে। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে সেই অনুপাত ১০৪ শতাংশ। আর পাকিস্তানে জিডিপি আর ঋণের অনুপাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ শতাংশে।
এ অবস্থায় ফের আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তানের নতুন সরকার। তবে আইএমএফের ঋণ এবার কতটুকু ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুতই দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। পাশাপাশি ইমরান খানের পতনের পর মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফের কর্মী ও সমর্থকরা।