সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪ ১০:১২ পূর্বাহ্ণ
বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিশুর উচ্চতা কিছুতেই বাড়ছে না? বাবা-মায়ের এমন দুশ্চিন্তা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিভিন্ন ধরনের খাবার বা ওষুধের ওপরেই কি শুধু ভরসা রাখছেন? তা হলে এ সমস্যার সমাধান না-ও হতে পারে। শিশুর ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধেই পুষ্টি পায়। এই সময়ে সন্তানের খাওয়া নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করতে হয় না মা-বাবাকে। কিন্তু আসল চিন্তা শুরু হয় তখন, যখন শিশু স্কুলে যাওয়া শুরু করে। এরপর শুরু হয় মা-বাবার দুশ্চিন্তা। সন্তানের উচ্চতা ঠিকঠাক বাড়ছে কিনা, পুষ্টির চাহিদা মোতাবেক তার শরীর বাড়ছে কিনা। খাওয়াদাওয়া কোনো কমতি হচ্ছে কিনা।
আর সেই সঙ্গে কোন কোন পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত খাওয়ালে শিশু পুষ্টি পাবে এবং শরীর বৃদ্ধি সঠিকভাবে হবে, তা জেনে রাখুন।
দুগ্ধজাত খাবার: সবার আগে জরুরি দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। এ বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের বক্তব্য— দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম থাকে, যা হাঁড়ের গঠন মজবুত করে। আর থাকে ভিটামিন এ, বি, ডি ও ই। শিশু বৃদ্ধির জন্য যা জরুরি। তাই শিশুর ডায়েটে যতটা সম্ভব দুধ রাখার চেষ্টা করুন। দই, চিজ়, পনিরও দিন শিশুকে। দিনে অন্তত তিন বার শিশুর ডায়েটে রাখুন দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার।
প্রিয়ঙ্কর জানাচ্ছেন, অনেক শিশুই সবজি খেতে চায় না। না চাইলে জোর করে খাওয়াবেন না। বরং সারা দিনে অল্প অল্প করে সবজি সেদ্ধ, ফল দিয়ে স্যালাদ বানিয়ে খাওয়ান। মেথি, পালংশাক, বাঁধাকপির মতো সবজিতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালশিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। একটা গোটা আলুতে রয়েছে তিন গ্রাম ক্যালশিয়াম, এক কাপ ব্রকোলিতে রয়েছে পাঁচ গ্রাম ক্যালশিয়াম। তা ছাড়া সয়াবিনও খাওয়ান শিশুকে। দিনে এক কাপের মতো সয়াবিন খেলেই প্রয়োজনীয় প্রোটিন পাবে শিশু।
আর যদি শিশু দুধ খেতে না চায় বা দুধে অ্যালার্জি থাকে, তা হলে অবশ্যই শিশুকে বাদাম খেতে দিন। কাঠবাদাম, আখরোট, পেস্তা, কাজু মেটাতে পারে ক্যালসিয়ামের অভাব। বাদাম শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও অত্যন্ত জরুরি। বাদামে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ়, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন ই, যা হাঁড়ের গঠন মজবুত করে।
আর উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ডিম খাওয়াতেই হবে শিশুকে। ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। তবে শিশুর ওজন যদি বেশি হয়, তা হলে কুসুম বাদ দিয়ে খাওয়ানো ভালো। ডিমে ভিটামিন বি২ থাকে, যা উচ্চতা বৃদ্ধির সহায়ক।
এ ছাড়া শিশুর উচ্চতা বয়স অনুপাতে না বাড়লে বিভিন্ন শরীরচর্চার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। যেমন— সাঁতার, স্কিপিং, দৌড়ানো, জগিং, সাইকেল চালানো ইত্যাদি।