ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দ্বৈরথে যত ইতিহাস

ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দ্বৈরথে যত ইতিহাস

খেলা স্পেশাল

মে ৮, ২০২৩ ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ

সবশেষ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর দীর্ঘ ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশটিতে টাইগাররা আর খেলতে নামেনি। অবশেষে ইংলিশ কন্ডিশনে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে গেছেন তামিম-সাকিবরা।

ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ৯ মে সিরিজের প্রথম ওয়াডেতে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে টাইগার বাহিনী। এরপর একই মাঠে ১২ ও ১৪ মে সিরিজের বাকি দুই ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে শুক্রবার (৫ মে) আয়ার‌ল্যান্ডের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। তবে বেরসিক বৃষ্টিতে সেই ম্যাচটি ভেস্তে গেছে। এতে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই আইরিশদের সঙ্গে লড়াই করতে হবে সফরকারীদের।

আসন্ন সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এ সিরিজে ভালো ফলাফল এশিয়া কাপ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য সাহস জোগাবে টাইগারদের। এজন্য এ সিরিজকে নিজেদের ‘আদর্শ’ প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

এদিকে আয়ারল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের ওপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ ভাগ্য নির্ভর করছে। মুদ্রার অন্য পিঠে সিরিজে টাইগারদের ৩-০ ব্যবধানে হারাতে পারলে ভারত বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নিবে আইরিশরাও। এতে বিশ্বকাপের স্বপ্নভঙ্গ হবে প্রোটিয়াদের।

চলতি বছরের এপ্রিলে ঘরের মাঠে আয়ার‌ল্যান্ডকে পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ।

চলতি বছরের এপ্রিলে ঘরের মাঠে আয়ার‌ল্যান্ডকে পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ।

এর আগে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে (ওডিআই) ১৩বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড। এর মধ্যে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৯ ম্যাচে জয় ও দুটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। বাকি দুই ম্যাচের কোনো ফলাফল হয়নি।

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের দ্বৈরথ শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালের ১৫ এপ্রিলে। বিশ্বমঞ্চে আইরিশদের সঙ্গে প্রথম দেখাতেই হারের তেতো স্বাদ পায় টাইগাররা। সেবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার এইটে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড।

এরপর নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রান করে আইরিশরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৬৯ রানে সব উইকেট হারিয়ে লজ্জার হার হারে বাশার-আশরাফুলরা।

পরের বছরই বাংলাদেশ সফর করে আয়ারল্যান্ড। এ সফরে আইরিশদের লজ্জার হোয়াইট ওয়াশ উপহার দেয় টিম টাইগার্স।

২০০৮ সালের ১৮ মার্চ মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড। এ ম্যাচে মাশরাফী ও সাকিবের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৮৫ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৬১ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের সহজ জয় পায় স্বাগতিকরা।

২০ মার্চ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। এ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২৪৬ রান করে স্বাগতিকরা। রান তাড়ায় ফরহাদ রেজার পেসের কাছে পরাস্ত হয় আইরিশরা। এতে মাত্র ১৬৯ রানেই অল আউট হয়ে যায় সফরকারী দল।

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে তামিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ২৯৩ রান করে টাইগার বাহিনী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সাকিব-রাজ্জাক ঘূর্ণিতে ২১৪ রানে থামে আইরিশদের ইনিংস।

২০১০ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ডে যায় বাংলাদেশ। এ সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় টাইগাররা। প্রতিপক্ষ ছিল সেই আয়ার‌ল্যান্ড।

বেলফাস্ট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৯ রান করে তারা। এদিন লাল-সবুজের জার্সিতে দুর্দান্ত শতক তুলে নেন জুনায়েদ সিদ্দিকী।

২০১৭ সালে মুস্তাফিজুরের কাটারে হার মানে আয়ারল্যান্ড।

২০১৭ সালে মুস্তাফিজুরের কাটারে হার মানে আয়ারল্যান্ড।

বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তিন উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আয়ারল্যান্ড। এদিন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন জুনায়েদ।

অবশ্য সিরিজের পরের ম্যাচেই জয়ের ধারায় ফিরে বাংলার বাঘরা। বেলফাস্টে শফিউলের বোলিংয়ে অল্পেই থামে আয়ারল্যান্ড। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে নির্ধারিত ৪৬ ওভারে ১৮৯ রান করে আইরিশরা। রান তাড়ায় ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয় পায় টাইগাররা।

ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ২০১১ সালের বিশ্বকাপে আবারো বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় আয়ারল্যান্ড। গ্রুপ পর্বের ৯ নম্বর ম্যাচে আয়ার‌ল্যান্ডকে পরাজয় উপহার দেয় সাকিব বাহিনী। এ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২০৫ রান করে স্বাগতিকরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৭৮ রানে সব উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারী দল। এতে ২৭ রানে জয় পায় টাইগাররা।

২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশকে নিয়ে ট্রাই নেশন (ত্রিদেশীয়) সিরিজের আয়োজন করে আয়ারল্যান্ড। এ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে জয় তুলে নেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজারা।

এরপর ২০১৯ সালে আবারো উইন্ডিজ ও বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেয় আইরিশরা। এ সিরিজের হাইভোল্টেজ ম্যাচে স্বাগতিকদের দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্য টপকে যায় টাইগাররা। ওই ম্যাচে তামিম, লিটন ও সাকিব অর্ধ শতকের দেখা পান। এতে ৪২ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের সহজ জয় পায় সফরকারী বাংলাদেশ।

সবশেষ চলতি বছরের মার্চে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসে আয়ারল্যান্ড। এবার টাইগারদের কাছে পাত্তাই পায়নি সফরকারীরা। টেস্ট ও টি-২০ সিরিজের পর ওয়ানডেতেও হারের তেতো স্বাদ পান বালবির্নি-স্টার্লিংরা।

২০১০ সালে বেলফাস্টে শরিফুলের পেস পরাস্ত হয় আইরিশরা।

২০১০ সালে বেলফাস্টে শরিফুলের পেস পরাস্ত হয় আইরিশরা।

ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে আয়ারল্যান্ড। এই ফরম্যাটে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩৮ রান করে টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।

দ্বিতীয় ম্যাচ ওয়ানডে ফরম্যাটে রেকর্ড ২৪৯ রান করে বাংলাদেশ। তবে বেরসিক বৃষ্টিতে সেই ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ম্যাচ রেফারিরা।

অবশ্য তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পায় বাংলাদেশ। এদিন পাঁচ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হন তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড। তবে হাসান মাহমুদ ও তাসকিন ঝড়ে ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে লিটনের অর্ধশতক ও তামিমের ৪১ রানে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *