ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে নেওয়ার পক্ষে নয় তুরস্ক। এ কথা জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দেশ দুটিকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আঙ্কারা ভেটো দিতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ মে) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এরদোয়ান বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে চলমান অগ্রগতি আমরা পর্যালোচনা করছি।
তিনি বলেন, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর সদস্যপদ চাওয়ার প্রত্যাশিত পদক্ষেপের বিষয়ে আঙ্কারার ‘ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’ নেই। কারণ, দেশগুলো ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের অতিথিশালা’। তাই তাদের পক্ষ নেওয়া সম্ভব নয়। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি এরদোয়ান। খবর আল জাজিরার।
তুরস্কের কাছে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচিত অনেক সংগঠন, বিশেষ করে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) এবং সিরিয়ান কুর্দিশ পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) পরিচালনা করার জন্য বরাবরই সুইডেন এবং অন্যান্য পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনা করে আসছেন এরদোয়ান।
ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শর্ত হিসেবে সম্প্রতি মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটের কাছে সর্বোচ্চ সুরক্ষা পাওয়ার গ্যারান্টি চেয়েছে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। দেশ দুটির এই চাওয়া পূরণ করতে সুইডেন তীরবর্তী পূর্বসাগরে যুদ্ধজাহাজও পাঠিয়েছে ন্যাটো।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলোর জন্য ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে ওঠা রাশিয়াকে ঠেকাতে দিনের পর দিন নানা পরিকল্পনা সাজাচ্ছে ন্যাটো। এবার নিজেদের সামরিক শক্তি আরও বাড়াতে বাল্টিক অঞ্চলসহ রাশিয়ার প্রতিবেশী সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকেও দলে ভেড়াতে চায় এই জোট।
আঞ্চলিক নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ‘সবকিছু’ করতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেন, সুইডেন ও নরওয়ের ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি এই অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশ দুটির আবেদনের পাশাপাশি তাদের ভৌগোলিক সীমান্ত সুরক্ষা দিতেও বাধ্য ন্যাটো।
এর আগে, ন্যাটোয় যুক্ত হলে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। বলেন, এই অঞ্চলে রাশিয়ার কোনো আঘাত বরদাশত করা হবে না। আর ন্যাটো কিংবা পশ্চিমাদের যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় রাশিয়ার সামরিক শক্তি অটুট থাকবে বলে জানায় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।