পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ইহুদি রক্ত’ মন্তব্য নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাতে খবরটি দিয়েছে বিবিসি ও ওয়াশিংটন পোস্ট।
নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের শরীরে ইহুদি রক্ত ছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ইসরাইল জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গে এক ফোনকলে ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন পুতিন।
কিন্তু দুই নেতার ফোনকল নিয়ে রাশিয়ার বিবরণে ক্ষমার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। সামরিক অভিযানকে ন্যায্যতা দিতে কিয়েভকে ‘নতুন নাৎসি’ হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একজন ইহুদি ধর্মাবলম্বী।
এদিকে সামরিক অভিযানে রাশিয়া নাৎসি প্রপাগান্ডা ও ইহুদিবিদ্বেষ ব্যবহার করেছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেন।
ইসরাইল হলোকাস্ট স্মরণ দিবস পালনের কয়েকদিন পর ইতালিয়ান টেলিভিশনের সঙ্গে কথা বলেন লাভরভ। ইহুদিবাদী দেশটির পঞ্জিকায় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করা দিনগুলোর একটি হলোকাস্ট দিবস।
লাভরভকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন নিজেই একজন ইহুদি, তখন সেখানে রাশিয়া কীভাবে ইউক্রেনকে নাৎসি মুক্ত করতে যাচ্ছে?
জবাবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার ভুল হতে পারে। কিন্তু হিটলারেরও ইহুদি রক্ত ছিল। এর অর্থ হচ্ছে, জেলেনস্কি ইহুদি হলেও তাতে কিছু যায়-আসে না। বিজ্ঞ ইহুদিরা বলে থাকেন, অতি উৎসাহী ইহুদিবিদ্বেষীরা সাধারণত ইহুদি হয়ে থাকেন।
লাভরভের মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইসরাইলিরা। নাফতালি বেনেট বলেন, ল্যাভরভের বক্তব্য এতোই মিথ্যা যে, যা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধের দায় ইহুদিদের ওপরই চাপিয়ে দেওয়ার শামিল। আর এভাবেই তাদের জবাবদিহিতা থেকে ইহুদি নিপীড়কদের রেহাই দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের (৫ মে) নাফতালি বেনেটের কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি (নাফতালি বেনেট) পুতিনের ক্ষমা গ্রহণ করেছেন। আর ইহুদি ও হলোকাস্ট নিয়ে তার মনোভাব স্পষ্ট করায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
রাশিয়ার বিবৃতিতে বলছে, দুই নেতার মধ্যে হলোকাস্ট নিয়ে আলাপ হয়েছে। তবে পুতিনের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন অবকাঠামোতে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। কিয়েভের সেনাদের রসদ সরবরাহে এসব অবকাঠামো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়া রুশ রাজনীতিবিদেরা বলেন, দুই দেশের মধ্যে নতুন করে বৈঠক শুরু করা কঠিন।
রুশ আলোচক লিওনিড স্লুটস্কি অভিযোগ করেন, বিদ্যমান চুক্তি থেকে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা সরে গেছেন। তারা আর আগের অবস্থানে নেই।