এপ্রিল ১৯, ২০২২ ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অত্যধিক মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ত জীবন— অনেক ক্ষেত্রেই দৈনন্দিন যাপনের মধ্যেই নিহিত থাকে হৃদরোগের কারণ।
অনেক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সেন্টার্স অব ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে এক জন হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা যান। গত বছর ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও তুলে ধরা হয়েছে যে, ভারত-সহ সব দেশে নারীদের মধ্যে কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ বাড়ছে।
পুরুষ আর নারীদের মধ্যে হৃদরোগের উপসর্গগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নারীর ক্ষেত্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। এক্ষেত্রে মূলত ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গগুলোই প্রকট হয়।
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক কেন নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি-
>> ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে নারীদের ঋতুবন্ধ হয়। ঋতুবন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। এ কারণে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
>> অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক নারীই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। এ সময়ে রক্তচাপ বেড়ে গেলে রক্তনালিকাগুলো দিয়ে রক্ত ও অক্সিজেন পর্যাপ্ত মাত্রায় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না। এক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়।
>> ধূমপানের অভ্যাস বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের আশঙ্কা। ধূমপান বন্ধ করে দিলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে শতকরা আশি ভাগ। অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। এতেও হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে।
>> ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এই সব রোগের কারণে রক্তনালিকাগুলো সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ে। রক্ত প্রবাহে বাধা তৈরি হয়। ফলস্বরূপ হৃদযন্ত্রের উপর চাপ পড়ে। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও বেড়ে যায়।
>> মানসিক চাপের কারণেও নারীদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হৃদ্রোগের অন্যতম বড় অনুঘটক। শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম অবশ্যই প্রয়োজন। কর্মব্যস্ততা এবং অবসাদের কারণে অনেক নারীরাই অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। এতেও কিন্তু ঝুঁকি বাড়ে।