এপ্রিল ১০, ২০২২ ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন খালি করেছিলেন ইমরান খান। রোববার (১০ এপ্রিল) একথা জানান ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) একজন সিনিয়র নেতা। খবর এনডিটিভির।
ইমরান খানকে সরকারি বাসভবন থেকে বিদায় জানানোর কথা জানিয়েছেন পিটিআই নেতা ফয়সাল জাভেদ খান। শনিবার (৯ এপ্রিল) মধ্যরাতে এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিদায় নিয়েছেন। তিনি সদয়ভাবে বেরিয়ে গেলেন এবং মাথা নত করেননি। পাকিস্তানি হিসেবে গর্ববোধ করছি এবং তার মতো একজন নেতা পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। পাকিস্তানের খান-ইমরান খান।’
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন পত্রিকার খবরে বলা হয়, ইসলামাবাদের বানিগালায় নিজের বাসভবনের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ত্যাগ করেছেন ইমরান খান।
পাকিস্তানের ইতিহাসে অনাস্থা ভোটে হেরে যাওয়া প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম লিখিয়েছেন ইমরান খান। শনিবার (৯ এপ্রিল) মধ্যরাতে অনাস্থা ভোটে হেরে যান তিনি। এর আগে দেশটির ইতিহাসে অনাস্থা ভোটে হেরে কোনো প্রধানমন্ত্রী পদ হারাননি। অনাস্থা ভোটের অধিবেশনটি পরিচালনা করেন সাবেক স্পিকার আয়াজ সাদিক। বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।
ইমরানের অনাস্থা ভোটের অধিবেশনটি শনিবার (৯ এপ্রিল) চার দফায় মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। কিন্তু অনাস্থা ভোটের আগে ইমরান খানের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংসদের ভেতর তুমল হট্টগোলে জাতীয় পরিষদের স্পিকার সাময়িকভাবে অধিবেশন মুলতবি করেন।
এর দুই ঘণ্টা পর আবার অধিবেশন শুরু হয়। পরে দেওয়া হয় নামাজের বিরতি। এরপর পুনরায় শুরু হলে আবারও হট্টগোলে বিরতিতে যান স্পিকার। পরে দুই দফায় দেওয়া হয় ইফতার ও এশার নামাজের বিরতি। রাত সাড়ে ৯টায় তা আবার শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিলম্বিত হয়। শেষমেষ রাত ১২টার কিছু আগে অনাস্থা ভোট শুরু হয়।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গত ৩ এপ্রিল খারিজ করে দিয়েছিলেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। পরে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট।
ওই দিন অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের বৈধতা নিয়ে শুনানি গ্রহণ করেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিনের দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। শনিবার (৯ এপ্রিল) অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিরও নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসেন ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খান। করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও দুর্নীতিমুক্ত পাকিস্তান গড়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে ইমরানের বিরুদ্ধে।