এপ্রিল ১৩, ২০২২ ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ
ফিনল্যান্ড ও সুইডেন আগামী গ্রীষ্মের শুরুতেই পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেছে। যা ইতোমধ্যেই ভাবাতে শুরু করেছে রাশিয়াকে। রাশিয়া এরই মধ্যে দেশ দুটিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, এমন পদক্ষেপ ইউরোপে স্থিতিশীলতা আনতে কোনো ভূমিকা রাখবে না। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার (১১ এপ্রিল) সাংবাদিকদের বলেন, এটি (ন্যাটো) এমন কোনো জোট নয় যা বিশ্বজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। এর আরও সম্প্রসারণ ইউরোপে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বয়ে আনবে না।
এর আগে সংবাদ মাধ্যম দ্য টাইমসকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড বিষয়ে কয়েকটি আলাদা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এরপরই বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।
সে সময় ন্যাটোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ইউক্রেনে রুশ বাহিনী সামরিক অভিযান চালানোর পর ফিনল্যান্ড ও সুইডেন গুরুত্বের সঙ্গে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করে।
মস্কো বরাবরই স্পষ্টভাবে বলে আসছে, তারা ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে। ইউক্রেনকেও ন্যাটো জোটে সামিল না হতে এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল রাশিয়া।
মস্কো এবারই প্রথম না, আগে থেকেই ফিনল্যান্ডকে সাবধান করে আসছে। দুই দেশের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৪০০ কিলোমিটারের সীমান্ত। তবে রাশিয়ার ইউক্রেনে অভিযানের পর এখন ন্যাটোতে যোগ দেওয়া ছাড়া বিকল্প দেখছে না ফিনল্যান্ড। ফিনিশ প্রধানমন্ত্রী সানা ম্যারিন আগেও ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, সময় হয়ে এসেছে। ইউক্রেনে হামলার মধ্য দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের সম্পর্ক বদলে গেছে। তাই ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
ইউক্রেনে রুশ হামলার পর ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার দাবি জোরদার হয়েছে সুইডেনেও। সুইডিশ ক্ষমতাসীন স্যোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি আগে ন্যাটোতে যোগদানের বিপক্ষে থাকলেও এখন তারা বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবছে।
ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বলেছেন, ন্যাটোর সম্ভাব্য সদস্যপদ নিয়ে আগামী সপ্তাহে তাদের পার্লামেন্টে আলোচনা শুরু করা হবে। গ্রীষ্মের আগেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, এই গ্রীষ্মেই নর্ডিক দেশ দুটো ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে সবকিছু প্রস্তুত করছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ন্যাটোর সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে বেড়ে ৩২ হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা দ্য টাইমস গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা বলছেন, ইউক্রেনে আক্রমণ করে রাশিয়া বিশাল কৌশলগত ভুল করেছে। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য হওয়া থেকে আটকানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলো নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যাটোর সদস্য হচ্ছে।
সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের জুনেই ন্যাটোতে যোগ দিচ্ছে ফিনল্যান্ড। এরপরেই যুক্ত হবে সুইডেনও।