আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসার অভিযোগে নিপুণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন জায়েদ খান। এ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের শুনানি পিছিয়ে আগামী ২৩ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে জায়েদ খানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও নাহিদ সুলতানা যুথি। আর নিপুণের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
এর আগে ১৪ মার্চ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থার আদেশ কঠোরভাবে পালন করতে জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তারকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ ছাড়া ওই দিন আদেশে আবেদনটি চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি রাখা হয়েছিল (স্ট্যান্ড ওভার)। ওই দিন আদালত বলেছিলেন, ‘এ সময়ের মধ্যে কেউ চাইলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে পারবেন।’
গত ৮ মার্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসার অভিযোগে নিপুণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন জায়েদ খান।
জায়েদ খানের আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও নিপুণ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে চেয়ারে বসছেন এবং কার্যক্রম চালাচ্ছেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও নিপুণ আক্তার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে চেয়ারে বসছেন এবং কার্যক্রম চালাচ্ছেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন জানানো হয়েছে।
এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনের আপিল বোর্ডের প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তার আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি।
সেই রিটের শুনানি নিয়ে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এক সপ্তাহের মধ্যে মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।
পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন জানান নিপুণ আক্তার। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি সম্পাদক পদের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া চেম্বার আদালত বাংলাদেশ শিল্পী সমিতি নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। একই সঙ্গে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নিপুণের আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। পাশাপাশি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলেও আদালত তার আদেশে জানিয়েছিলেন।
এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। তবে আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করে নিপুণের বিরুদ্ধে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসার অভিযোগ তোলেন জায়েদ খান।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন। ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন জায়েদ খান। ভোটারদের রায় মেনে নেননি নিপুণ। আপিল করেন আপিল বোর্ডে। পাশাপাশি জায়েদ খানের নামে বিভিন্ন অভিযোগ করেন। তার মধ্যে অন্যতম, নোট দিয়ে ভোট কিনেছেন জায়েদ খান।