টিপু হত্যায় পাঁচ আসামির যার যে ভূমিকা ছিল

আদালত স্লাইড

এপ্রিল ৫, ২০২২ ৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। তারা সবাই বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে। এদিকে গতকাল রোববার এ মামলায় পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর হত্যা মামলায় তাদের দশদিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনে টিপু হত্যায় পাঁচ আসামির কার কি ভূমিকা ছিল সে বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার উল্লেখ করেছেন।

নাছির উদ্দিন: এ হত্যাকাণ্ড সংগঠনের সময় তিনি জাহিদুল ইসলাম টিপুকে নজরদারি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য অর্থ প্রদান করেছে। ঘটনার পরবর্তীতে সে তার মোবাইল ফ্ল্যাশ করে বিক্রি করে দেয় ও সিম কার্ড ভেঙে ফেলে। পরবর্তীতে মোবাইল ও সিম কার্ড উদ্ধার করে র‌্যাব। এছাড়া ঘটনার আগের দিন সে সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম এলাকায় একদিন অবস্থান করেছিল। সে রিজভী বাবু হত্যাকাণ্ডের এক নম্বর আসামি। তার নামে পল্লবী থানায় অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা রয়েছে।

মো. ওমর ফারুক: টিপু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী তিনি। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, আন্ডার ওয়ার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও হত্যাকাণ্ড সংগঠনের জন্য তত্ত্বাবধান ও অর্থ লেনদেন করে। ওমর ফারুক ২০১৬ সালে রিজভী হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। সে এ মামলায় কারাভোগ করেছে।

কাইল্লা পলাশ: মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ ঘটনার দিন জাহিদুল ইসলাম টিপুকে নজরদারি ও আন্ডার ওয়ার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডটি বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। এর আগে সে মতিঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় কারাভোগ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, এই ঘটনায় আবু সালেহ শিকদার নামে একজন জড়িত আছে।

শ্যুটার সালেহ: আসামি আবু সালেহ শিকদার ওরফে শ্যুটার সালেহ ঘটনার পরিকল্পনা ও অর্থ প্রদানের সঙ্গে জড়িত। সে রিজভী হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধে ১২টি মামলা রয়েছে এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে।

আসামি দামাল: আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমান খান ওরফে দামাল এ ঘটনায় জড়িত ছিল মর্মে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তার নেতৃত্বে একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ পল্টন, মতিঝিল, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্যে অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার করে এবং রূপালী যুব উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়। জাহিদুল ইসলাম টিপু ও সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি হত্যা মামলায় অস্ত্র সরবরাহ করেছে মর্মে জানা যায়।

মামলার সূত্রে যা জানা যায়:

গত ২৪ মার্চ শাজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনের দিকে টিপুর গাড়ি লক্ষ্য করে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিতে টিপু, তার গাড়িচালক মুন্না এবং রিকশা আরোহী একটি কলেজশিক্ষার্থী প্রীতি গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় টিপু ও প্রীতির মৃত্যু হয়।

এরপর শুক্রবার নিহত টিপুর স্ত্রী জলী আক্তার বাদি হয়ে শাজাহানপুর থানায় এ মামলা করেন। ঐ রাতেই রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, নগদ টাকা ও মোবাইলসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।

এর আগে দামালকে গ্রেফতার করে মতিঝিল থানার একটি অস্ত্র মামলায় তাকে একদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এ মামলা দায়েরের পর গত ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর গত ২৮ মার্চ তার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

বর্তমানে মাসুম রিমান্ডে রয়েছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার আসামি মোহাম্মদ ওমর ফারুকসহ পাঁচজনের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন-নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির ও মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ, সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ ও আরফান উল্লাহ দামাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *