এপ্রিল ২৬, ২০২২ ৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ
ইউক্রেন ইস্যুতে সামনে আসা পরমাণু যুদ্ধের হুমকিকে ছোট করে না দেখতে পশ্চিমাদের সতর্ক করেছে রাশিয়া। সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহের অর্থ হলো, ন্যাটো জোট এক অর্থে রাশিয়ার সঙ্গে ছায়া যুদ্ধে জড়িয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর পাঠানো এসব অস্ত্র বিশেষ অভিযানের প্রেক্ষাপটে রুশ সামরিক বাহিনীর বৈধ লক্ষ্য হবে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাভরভ বলেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে এক অর্থে যুদ্ধে লিপ্ত। তারা ছায়াযুদ্ধ করে যাচ্ছে এবং অস্ত্র জুগিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ অর্থ যুদ্ধই।
সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভের কাছে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ এড়ানোর গুরুত্ব জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে ১৯৬২ সালে কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের তুলনা হয় কিনা জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে ল্যাভরভ বলেন, রাশিয়া পরমাণু যুদ্ধ এড়ানোর নীতি সমুন্নত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, এটাই আমাদের মূল অবস্থান, যার ওপর ভিত্তি করে সবকিছু হচ্ছে। ঝুঁকি এখন বিবেচনাযোগ্য। আমি কৃত্রিমভাবে সে ঝুঁকি বাড়াতে চাই না। অনেকেই তা চাইবেন। বিপদ গুরুতর, বাস্তব। আর আমাদের এটি অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।
লাভরভ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে আলোচনার ভান করার অভিযোগ তুলে তাকে একজন ভালো অভিনেতা বলে মন্তব্য করেন। রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, যদি আপনি মনোযোগ সহকারে দেখেন এবং জেলেনস্কি যা বলেছেন তা মনোযোগ সহকারে পড়েন, আপনি হাজার স্ববিরোধিতা খুঁজে পাবেন।
এদিকে লাভরভের বক্তব্যের পর ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুবেলা টুইট করে বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থন করা থেকে বিশ্বকে ভয় দেখানোর আশা শেষ হয়ে গেছে রাশিয়ার। লাভরভের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলোতে সে ইঙ্গিত ছিল। এ কারণের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রকৃত বিপদের কথার অবতারণা করা হয়েছে। এর একমাত্র অর্থ, ইউক্রেনে নিজেদের পরাজয়ের আঁচ পেতে শুরু করেছে মস্কো।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানা এক মাস ধরে উত্তেজনা চলার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় রাশিয়া। দুই মাসের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। ১৯৪৫ সালের পর কোনো ইউরোপীয় দেশে এটাই সবচেয়ে বড় আক্রমণ। দুই পক্ষের লড়াইয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটার পাশপাশি ইউক্রেন ছেড়েছে প্রায় ৫২ লাখ মানুষ।
লাভরভ দাবি করেন পশ্চিমারা স্পর্শকাতর অস্ত্র সরবরাহ করায় এই সংঘাত অবসানের বদলে দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ে পরিণত হতে যাচ্ছে। ইউক্রেনকে জাভেলিন ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, সাঁজোয়া যান, অত্যাধুনিক ড্রোন সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। লাভরভ বলেন, বিশেষ অভিযানের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের জন্য এই অস্ত্রগুলো বৈধ নিশানা হবে।